3:28 pm, Tuesday, 9 September 2025

দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময়ে ও মিলেনি কেয়ামনির সন্ধান

1748748087395

 

এম রাসেল সরকার:
অভাবের তাড়নায় সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার চিন্তা মাথায় নিয়ে, চিরচেনা প্রাণের গ্রাম ছেড়ে, যান্তিক নগরী ঢাকায়, গৃহ পরিচারিকার কাজ করতে এসে গৃহ পরিচালকের বাসা থেকে  নিখোঁজ হয় কেয়ামনি (১৫) নামের কিশোরী। ২৬ শে এপ্রিল ২০২৫ নিখোঁজ হয়ে দীর্ঘ এক মাসের উপর অতিবাহিত হলেও কোন খবর পাওয়া যায়নি কেয়ামনির।

এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে ঢাকার, গেন্ডারিয়া,  ৫৩/১/ক দীন নাথ সেন রোডস্থ, মুসাফির মঞ্জিলে বসবাসরত গৃহকর্তী লাইজু আক্তার ময়নার ফ্লাটে।

এ বিষয়ে গেন্ডারিয়া থানায় উভয় পক্ষের অভিযোগ করলে ও পুলিশ দীর্ঘ এক মাসেও উদ্ধার করতে পারেনি কেয়ামনিকে। নিখোঁজের আট দিন পরে গেন্ডারিয়া থানায় গৃহকর্তী লাইজু আক্তার ময়না একটি দায় সারা নিখোজ জিডি করে নিজেকে গুছিয়ে নেন । নিখোজ কেয়া মনির মা বারবার তাদের কাছে আকুতি জানালেও করা হয়নি কোন সহায়তা। উল্টো দিয়েছে বিভিন্ন রকম হুমকি ধমকি।

উপায়ন্ত না পেয়ে নিখোজ কেয়া মনির, অসুস্থ গর্ভবতী মা কুলসুম বেগম, গণমাধ্যম কর্মীদের সাহায্য নিয়ে, ঢাকার গেন্ডারিয়া থানায় হাজির হয়ে ২৭ শে মে ২০২৫ তারিখে,  লাইজু আক্তার ময়না এবং ময়নার দেবর, বাবুল আহমেদ ওরফে বাবু মোল্লাকে সন্দেহ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে কুলসুম জানান দীর্ঘ তিন মাস যাবত আমার মেয়ে তার বাড়িতে কাজ করে, গত মাসের ২৬ তারিখে ময়না আমাকে ফোন দিয়ে জানান  আমার মেয়ে নাকি বাসা থেকে চলে গিয়েছে। এই কথা জানার পরে আমি বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিয়ে কোন সন্ধান না পেয়ে পুনরায় ফোন করলে কাছে ফোন করলে ময়না  একেক সময় একেক রকম কথা বলে। বাজে ব্যবহার করা সহ দেয় হুমকি-ধমকি।

কুসুম বেগম আরো জানান ওই বাসায় থাকা অবস্থায় আমার মেয়েকে ঠিকমত কথা বলতে দিত না আমার সাথে। যখনই বলতো তখনই ময়না  সামনে উপস্থিত থাকতো। একদিন সুযোগ পেয়ে আমাকে জানায় মা আমি বাসায় থাকতে পারবো না, বাবু নামে ওনার এক দেবর প্রায় সময় তে এই বাসায় আসে, ময়নার সাথে মনে হয় উনার দেবরের অবৈধ সম্পর্ক আছে। উনারা আমার সাথে খুব বাজে আচরণ করে। আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও। কুলসুম বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলে আমার বুকের মানিক কোথায় আছে আমি জানিনা। আমার মেয়েকে একটু খুঁজে বের করে দিন। অনুসন্ধান করে বাবু এবং ময়নার অবৈধ সম্পর্কের সত্যতা পাওয়া যায়। নিজের আপন ভাইকে দূরে রেখে, বহু বছর ধরে এমন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বাবু ।

নিখোজ কেয়া মনি, মাদারীপুর জেলা কালকিনি থানা কলচুরি গ্রামের রেজাউল ও কুলছুম দম্পতি সন্তান

অন্যদিকে ২৭ শে মে অভিযোগের পরে গেন্ডারিয়া থানা পুলিশের সহায়তায় গণমাধ্যম কর্মী সহ কেয়ামনির মা-বাবা,  ময়নার বাসায় উপস্থিত হলে একেক সময় এক এক রকম বক্তব্য দিতে থাকেন। ময়নার বড় বোন এবং ভাইগ্না বউ উপস্থিত হয়ে  ময়নার পক্ষে সাফাই গাইতে থাকে।

পুলিশসহ গণমাধ্যম কর্মীরা তদন্ত করে চলে আসার পরে এক গণমাধ্যম কর্মীর মোবাইলে কল দিয়ে বাবু মোল্লা চায়ের দাওয়াত দেয় এবং বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার কথা বলে। গণমাধ্যম কর্মী সম্পূর্ণ বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে কল কেটে দেয়। পরবর্তীতে আরেক নাম্বার থেকে গণমাধ্যম কর্মীকে ফোন দিয়ে ময়নার বাসায় গিয়েছে কেন সেটার কৈফত চাওয়া সহ গালিগালাজ করে। মামলার ভয় ভীতি দেখানো সহ দেয় হুমকি দমকি।

এ বিষয়ে গেন্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান। কেয়ামনির  নিখোঁজের ভিত্তিতে উভয় পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। যত দ্রুত সম্ভব ভিকটিমকে উদ্ধার করার চেষ্টা অব্যাহত রেখে , তদন্ত সাপেক্ষে  আইননুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 03:40:08 am, Sunday, 1 June 2025
218 Time View

দীর্ঘ এক মাসের বেশি সময়ে ও মিলেনি কেয়ামনির সন্ধান

Update Time : 03:40:08 am, Sunday, 1 June 2025

 

এম রাসেল সরকার:
অভাবের তাড়নায় সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার চিন্তা মাথায় নিয়ে, চিরচেনা প্রাণের গ্রাম ছেড়ে, যান্তিক নগরী ঢাকায়, গৃহ পরিচারিকার কাজ করতে এসে গৃহ পরিচালকের বাসা থেকে  নিখোঁজ হয় কেয়ামনি (১৫) নামের কিশোরী। ২৬ শে এপ্রিল ২০২৫ নিখোঁজ হয়ে দীর্ঘ এক মাসের উপর অতিবাহিত হলেও কোন খবর পাওয়া যায়নি কেয়ামনির।

এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে ঢাকার, গেন্ডারিয়া,  ৫৩/১/ক দীন নাথ সেন রোডস্থ, মুসাফির মঞ্জিলে বসবাসরত গৃহকর্তী লাইজু আক্তার ময়নার ফ্লাটে।

এ বিষয়ে গেন্ডারিয়া থানায় উভয় পক্ষের অভিযোগ করলে ও পুলিশ দীর্ঘ এক মাসেও উদ্ধার করতে পারেনি কেয়ামনিকে। নিখোঁজের আট দিন পরে গেন্ডারিয়া থানায় গৃহকর্তী লাইজু আক্তার ময়না একটি দায় সারা নিখোজ জিডি করে নিজেকে গুছিয়ে নেন । নিখোজ কেয়া মনির মা বারবার তাদের কাছে আকুতি জানালেও করা হয়নি কোন সহায়তা। উল্টো দিয়েছে বিভিন্ন রকম হুমকি ধমকি।

উপায়ন্ত না পেয়ে নিখোজ কেয়া মনির, অসুস্থ গর্ভবতী মা কুলসুম বেগম, গণমাধ্যম কর্মীদের সাহায্য নিয়ে, ঢাকার গেন্ডারিয়া থানায় হাজির হয়ে ২৭ শে মে ২০২৫ তারিখে,  লাইজু আক্তার ময়না এবং ময়নার দেবর, বাবুল আহমেদ ওরফে বাবু মোল্লাকে সন্দেহ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে কুলসুম জানান দীর্ঘ তিন মাস যাবত আমার মেয়ে তার বাড়িতে কাজ করে, গত মাসের ২৬ তারিখে ময়না আমাকে ফোন দিয়ে জানান  আমার মেয়ে নাকি বাসা থেকে চলে গিয়েছে। এই কথা জানার পরে আমি বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিয়ে কোন সন্ধান না পেয়ে পুনরায় ফোন করলে কাছে ফোন করলে ময়না  একেক সময় একেক রকম কথা বলে। বাজে ব্যবহার করা সহ দেয় হুমকি-ধমকি।

কুসুম বেগম আরো জানান ওই বাসায় থাকা অবস্থায় আমার মেয়েকে ঠিকমত কথা বলতে দিত না আমার সাথে। যখনই বলতো তখনই ময়না  সামনে উপস্থিত থাকতো। একদিন সুযোগ পেয়ে আমাকে জানায় মা আমি বাসায় থাকতে পারবো না, বাবু নামে ওনার এক দেবর প্রায় সময় তে এই বাসায় আসে, ময়নার সাথে মনে হয় উনার দেবরের অবৈধ সম্পর্ক আছে। উনারা আমার সাথে খুব বাজে আচরণ করে। আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও। কুলসুম বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে বলে আমার বুকের মানিক কোথায় আছে আমি জানিনা। আমার মেয়েকে একটু খুঁজে বের করে দিন। অনুসন্ধান করে বাবু এবং ময়নার অবৈধ সম্পর্কের সত্যতা পাওয়া যায়। নিজের আপন ভাইকে দূরে রেখে, বহু বছর ধরে এমন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বাবু ।

নিখোজ কেয়া মনি, মাদারীপুর জেলা কালকিনি থানা কলচুরি গ্রামের রেজাউল ও কুলছুম দম্পতি সন্তান

অন্যদিকে ২৭ শে মে অভিযোগের পরে গেন্ডারিয়া থানা পুলিশের সহায়তায় গণমাধ্যম কর্মী সহ কেয়ামনির মা-বাবা,  ময়নার বাসায় উপস্থিত হলে একেক সময় এক এক রকম বক্তব্য দিতে থাকেন। ময়নার বড় বোন এবং ভাইগ্না বউ উপস্থিত হয়ে  ময়নার পক্ষে সাফাই গাইতে থাকে।

পুলিশসহ গণমাধ্যম কর্মীরা তদন্ত করে চলে আসার পরে এক গণমাধ্যম কর্মীর মোবাইলে কল দিয়ে বাবু মোল্লা চায়ের দাওয়াত দেয় এবং বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার কথা বলে। গণমাধ্যম কর্মী সম্পূর্ণ বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে কল কেটে দেয়। পরবর্তীতে আরেক নাম্বার থেকে গণমাধ্যম কর্মীকে ফোন দিয়ে ময়নার বাসায় গিয়েছে কেন সেটার কৈফত চাওয়া সহ গালিগালাজ করে। মামলার ভয় ভীতি দেখানো সহ দেয় হুমকি দমকি।

এ বিষয়ে গেন্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান। কেয়ামনির  নিখোঁজের ভিত্তিতে উভয় পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। যত দ্রুত সম্ভব ভিকটিমকে উদ্ধার করার চেষ্টা অব্যাহত রেখে , তদন্ত সাপেক্ষে  আইননুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।