10:05 pm, Tuesday, 9 September 2025

সাংবাদিককে তুলে নিয়ে থানায় নির্যাতন, ওসিসহ ৮ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

168520 143

 

স্টাফ রিপোর্টার:
কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় মনছুর আলম মুন্না নামে এক সাংবাদিককে তুলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন, হত্যাচেষ্টা, চাঁদা দাবি এবং সাজানো মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওসিসহ আট পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে (নম্বর ৪-সদর) ভুক্তভোগী সাংবাদিক এ মামলা করেন ।

আসামিরা হলেন, চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া, উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ রাব্বি ইশান, এসআই সোহরাব সাকিব, উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পারভেজ ও অজ্ঞাত চার কনস্টেবল।

বাদী মনসুর আলম মুন্না ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের কক্সবাজার প্রতিনিধি। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ প্রকাশ করায় গত ২৫ ডিসেম্বর ভোরে কক্সবাজার শহরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ অফিস থেকে সাদা পোশাকধারী চার পুলিশ সদস্য মুন্নাকে অপহরণ করে। এ সময় মুন্নার চোখ কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। তাকে চকরিয়া থানায় নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক মনছুর আলম বলেন, ২৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে প্রধান আসামি চকরিয়া থানার ওসির নির্দেশে কক্সবাজারের কৃষি অফিস সড়কের দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের কক্সবাজার অফিস থেকে আমাকে তুলে নিয়ে যায় এসআই ফরহাদ রাব্বি ইশান, সোহরাব সাকিব, এএসআই পারভেজসহ চার কনস্টেবলসহ চকরিয়া থানার একদল পুলিশ। এ সময় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকা অফিসে রক্ষিত দুটি ল্যাপটপ, চারটি পেনড্রাইভ ও অন্যান্য সামগ্রী লুট করে নেয় পুলিশ। এরপর আমাকে চকরিয়া থানায় নিয়ে হত্যার উদ্দেশে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। এভাবে এক দিন আটকে রেখে মিথ্যা মামলা ওসি মনজুর চালান দিয়ে দেন। পরে সেখানে ২১ দিন বন্দি থাকার পর জামিনে মুক্তি পাই আমি।

বাদীর আইনজীবী সালাহ উদ্দীন আহমদ বলেন, ‘সাজানো মামলায় ওসি নিজেই বাদী ও নিজেই রেকর্ডকারী কর্মকর্তা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গভীর রাতে নিজের আঞ্চলিক এখতিয়ার বহির্ভূত এলাকায় গিয়ে একজন সাংবাদিককে ধরে এনে নির্যাতন করা আইনের পরিপন্থি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওসমান গনি বলেন, ‘বিজ্ঞ বিচারক আকতার জাবেদ মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানার জন্য ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়াকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘চকরিয়া থানার ওসির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হওয়ার বিষয়ে আমি জেনেছি। বিষয়টি যেহেতু তদন্তাধীন, তাই তদন্তের পরে বিস্তারিত জানা যাবে।’

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আহসান হাবীব পলাশ সাংবাদিকদের বলেন, ‘চকরিয়া থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে কেউ অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 05:42:32 am, Wednesday, 29 January 2025
203 Time View

সাংবাদিককে তুলে নিয়ে থানায় নির্যাতন, ওসিসহ ৮ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

Update Time : 05:42:32 am, Wednesday, 29 January 2025

 

স্টাফ রিপোর্টার:
কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় মনছুর আলম মুন্না নামে এক সাংবাদিককে তুলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন, হত্যাচেষ্টা, চাঁদা দাবি এবং সাজানো মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওসিসহ আট পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে (নম্বর ৪-সদর) ভুক্তভোগী সাংবাদিক এ মামলা করেন ।

আসামিরা হলেন, চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের ভূঁইয়া, উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ রাব্বি ইশান, এসআই সোহরাব সাকিব, উপ-পরিদর্শক (এএসআই) পারভেজ ও অজ্ঞাত চার কনস্টেবল।

বাদী মনসুর আলম মুন্না ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের কক্সবাজার প্রতিনিধি। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ প্রকাশ করায় গত ২৫ ডিসেম্বর ভোরে কক্সবাজার শহরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ অফিস থেকে সাদা পোশাকধারী চার পুলিশ সদস্য মুন্নাকে অপহরণ করে। এ সময় মুন্নার চোখ কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। তাকে চকরিয়া থানায় নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক মনছুর আলম বলেন, ২৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে প্রধান আসামি চকরিয়া থানার ওসির নির্দেশে কক্সবাজারের কৃষি অফিস সড়কের দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের কক্সবাজার অফিস থেকে আমাকে তুলে নিয়ে যায় এসআই ফরহাদ রাব্বি ইশান, সোহরাব সাকিব, এএসআই পারভেজসহ চার কনস্টেবলসহ চকরিয়া থানার একদল পুলিশ। এ সময় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকা অফিসে রক্ষিত দুটি ল্যাপটপ, চারটি পেনড্রাইভ ও অন্যান্য সামগ্রী লুট করে নেয় পুলিশ। এরপর আমাকে চকরিয়া থানায় নিয়ে হত্যার উদ্দেশে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। এভাবে এক দিন আটকে রেখে মিথ্যা মামলা ওসি মনজুর চালান দিয়ে দেন। পরে সেখানে ২১ দিন বন্দি থাকার পর জামিনে মুক্তি পাই আমি।

বাদীর আইনজীবী সালাহ উদ্দীন আহমদ বলেন, ‘সাজানো মামলায় ওসি নিজেই বাদী ও নিজেই রেকর্ডকারী কর্মকর্তা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গভীর রাতে নিজের আঞ্চলিক এখতিয়ার বহির্ভূত এলাকায় গিয়ে একজন সাংবাদিককে ধরে এনে নির্যাতন করা আইনের পরিপন্থি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওসমান গনি বলেন, ‘বিজ্ঞ বিচারক আকতার জাবেদ মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানার জন্য ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়াকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘চকরিয়া থানার ওসির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হওয়ার বিষয়ে আমি জেনেছি। বিষয়টি যেহেতু তদন্তাধীন, তাই তদন্তের পরে বিস্তারিত জানা যাবে।’

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আহসান হাবীব পলাশ সাংবাদিকদের বলেন, ‘চকরিয়া থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে কেউ অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।