1:13 am, Wednesday, 5 November 2025

কাস্টমস কর্মকর্তাকে ছেড়ে দিয়ে পুলিশের জিম্মায় শুধু তার সহযোগী!

দিগন্ত প্রতিদিন

arrest 20251007134829

 

জেলা প্রতিনিধি:
যশোরের বেনাপোল কাস্টমস হাউসে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে ঘুষের প্রায় ৩ লাখ টাকাসহ এক রাজস্ব কর্মকর্তা ও তার সহযোগীকে আটক করা হয়। এরপর কাস্টমস কমিশনারের রুমে নিয়ে ৪ ঘণ্টা বৈঠক শেষে কর্মকর্তা শামিমা আক্তারকে রেখে শুধু তার সহযোগী মো. হাসিবুরকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয়রা বেশ কিছুক্ষণ অভিযুক্তসহ দুদকের সবাইকে অবরুদ্ধ করে রাখে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) দুদক বিকেলে এ অভিযান পরিচালনা করে।

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার এবং তার সহযোগী স্থানীয় একটি এনজিওর সদস্য হাসিবুর।

জানা গেছে, হাসিবুর রহমান বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ৬ নম্বর শুল্কায়ন গ্রুপের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারের ঘুষের টাকা আদায় করে থাকে। হাসিবুর দুদকের কাছে এ টাকা রাজস্ব কর্মকর্তার বলে স্বীকার করলেও দুদক ওই রাজস্ব কর্মকর্তাকে আটক করেনি। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

যশোর জেলা দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত একটি টিম বেনাপোল কাস্টমস হাউসে প্রবেশ করে রাজস্ব শাখা, মূল্যায়ন শাখা ও প্রশাসনিক দপ্তরসহ বিভিন্ন কক্ষে ঘুরে তল্লাশি চালায়। এ সময় ৬ নম্বর শুল্কায়ন শাখা থেকে ঘুষ লেনদেনের প্রায় ৩ লাখ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।

দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দীন বলেন, আমাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল কাস্টমস হাউসে ঘুষ বাণিজ্য চলছে এবং মোটা অংকের টাকা লেনদেন হচ্ছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই আমরা অভিযান চালাই। আমরা কাস্টমস গেটে টাকাসহ এনজিওকর্মী হাসিবুর রহমানকে আটক করি। টাকা কার জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ টাকা রাজস্ব কর্মকর্তা শামিমা আক্তার ম্যাডামের। পরে কাস্টমস হাউসে সুপার শামিমার কাছে গেলে সে তার টাকা বলে স্বীকার করে। এরপর কাস্টমস কমিশনারসহ অন্যান্য অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এনজিওকর্মী হাসিবকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। যেহেতু শামিমার হাতে টাকা পাওয়া যায়নি তার বিষয় তদন্ত করা হবে। তাকে কেন থানায় দেওয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বেনাপোল পোর্ট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার সাহা বলেন, বেনাপোল কাস্টমস হাউসে দুদকের অভিযানের পর কর্মকর্তাকে আটক না করে তার সহযোগী এনজিওকর্মীকে আটক করায় স্থানীয়রা তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে আমরা গিয়ে অভিযুক্ত একজনসহ দুদক কার্যালয়ের সবাইকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। হাসিবুল এখনও আমাদের জিম্মায় আছে।

পরে বিষয়টি জানতে চেয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে দুদক যশোরের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক মো. আল-আমীন, উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী ও তাওহিদুল ইসলামকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করলেও তারা রিসিভ করেনি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 11:12:53 am, Tuesday, 7 October 2025
75 Time View

কাস্টমস কর্মকর্তাকে ছেড়ে দিয়ে পুলিশের জিম্মায় শুধু তার সহযোগী!

Update Time : 11:12:53 am, Tuesday, 7 October 2025

 

জেলা প্রতিনিধি:
যশোরের বেনাপোল কাস্টমস হাউসে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে ঘুষের প্রায় ৩ লাখ টাকাসহ এক রাজস্ব কর্মকর্তা ও তার সহযোগীকে আটক করা হয়। এরপর কাস্টমস কমিশনারের রুমে নিয়ে ৪ ঘণ্টা বৈঠক শেষে কর্মকর্তা শামিমা আক্তারকে রেখে শুধু তার সহযোগী মো. হাসিবুরকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয়রা বেশ কিছুক্ষণ অভিযুক্তসহ দুদকের সবাইকে অবরুদ্ধ করে রাখে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) দুদক বিকেলে এ অভিযান পরিচালনা করে।

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার এবং তার সহযোগী স্থানীয় একটি এনজিওর সদস্য হাসিবুর।

জানা গেছে, হাসিবুর রহমান বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ৬ নম্বর শুল্কায়ন গ্রুপের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তারের ঘুষের টাকা আদায় করে থাকে। হাসিবুর দুদকের কাছে এ টাকা রাজস্ব কর্মকর্তার বলে স্বীকার করলেও দুদক ওই রাজস্ব কর্মকর্তাকে আটক করেনি। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

যশোর জেলা দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত একটি টিম বেনাপোল কাস্টমস হাউসে প্রবেশ করে রাজস্ব শাখা, মূল্যায়ন শাখা ও প্রশাসনিক দপ্তরসহ বিভিন্ন কক্ষে ঘুরে তল্লাশি চালায়। এ সময় ৬ নম্বর শুল্কায়ন শাখা থেকে ঘুষ লেনদেনের প্রায় ৩ লাখ নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়।

দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দীন বলেন, আমাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল কাস্টমস হাউসে ঘুষ বাণিজ্য চলছে এবং মোটা অংকের টাকা লেনদেন হচ্ছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই আমরা অভিযান চালাই। আমরা কাস্টমস গেটে টাকাসহ এনজিওকর্মী হাসিবুর রহমানকে আটক করি। টাকা কার জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ টাকা রাজস্ব কর্মকর্তা শামিমা আক্তার ম্যাডামের। পরে কাস্টমস হাউসে সুপার শামিমার কাছে গেলে সে তার টাকা বলে স্বীকার করে। এরপর কাস্টমস কমিশনারসহ অন্যান্য অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এনজিওকর্মী হাসিবকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। যেহেতু শামিমার হাতে টাকা পাওয়া যায়নি তার বিষয় তদন্ত করা হবে। তাকে কেন থানায় দেওয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বেনাপোল পোর্ট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার সাহা বলেন, বেনাপোল কাস্টমস হাউসে দুদকের অভিযানের পর কর্মকর্তাকে আটক না করে তার সহযোগী এনজিওকর্মীকে আটক করায় স্থানীয়রা তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে আমরা গিয়ে অভিযুক্ত একজনসহ দুদক কার্যালয়ের সবাইকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। হাসিবুল এখনও আমাদের জিম্মায় আছে।

পরে বিষয়টি জানতে চেয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে দুদক যশোরের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক মো. আল-আমীন, উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী ও তাওহিদুল ইসলামকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করলেও তারা রিসিভ করেনি।