3:37 pm, Tuesday, 9 September 2025

মাঠে থাকা ত্যাগীরা পদবঞ্চিত হয়ে বিপদের সম্মূখীন, তৃণমূল পর্যায়ে পদে বিতর্কিতরা

এম রাসেল সরকার

2025 07 13a n17523749189322

 

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজনৈতক মাঠে থাকা ত্যাগী, পরীক্ষিত ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের উপক্ষো করে অনেক বিতর্কিত ব্যক্তিকে উপজেলা, ইউনিয়ন কমিটিতে জায়গা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল পর্যায়ে বেশ কয়েকটি জেলা-উপজেলার বিএনপির নেতৃবৃন্দের ওপর। বিতর্কিতরা পেয়েছে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ আর বিগত ১৬ বছর হামলা-মামলা, জেল-জুলুমসহ নানা চড়াই-উৎরাই পেড়িয়ে আন্দোলন সংগ্রামে রাজনৈতক মাঠে থাকা ত্যাগীরা পদবঞ্চিত হয়ে বিপদের সম্মূখীন।

অভিযোগ রয়েছে, দুঃসময় দলের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা ব্যক্তিরা ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসরাও স্থান পেয়েছে থানা ও ইউনিয়ন কমিটিতে। অভিযোগ উঠেছে গাজীপুর, জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নাটোর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, বরিশাল জেলাসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলার থানা ও ইউনিয়ন কমিটিতে বিতর্কিতরা স্থান পেয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন কমিটি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে।

এ অভিযোগ জানিয়েছেন খোদ বরিশাল জেলা দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম রাজন। তিনি বলেছেন, অর্থেও বিনিময়ে বাকেরগঞ্জের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে কমিটিতে ফ্যাসিস্ট দোসরদের পদ দেওয়া হয়েছে। এসব কমিটি বাতিল করতে হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে উপজেলা বিএনপির সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কৃত নেতা মাহাবুবুল হাসানকে কমিটির সহসভাপতি করা হয়েছে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কমিটির। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।

২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

এ বিষয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, বহিষ্কৃত নেতা মাহাবুবকে পদ দেওয়া গঠনতন্ত্রবিরোধী। একজন নেতার বহিষ্কার আদেশ থাকার পরও কিভাবে নতুন কমিটিতে ঠাঁই হয়, এটা আমাদের বোধগম্য নয়। যে লোক আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চলেছেন, আওয়ামী লীগের দোসরকে পদে দেওয়ায় ত্যাগী নেতাকর্মীরা হতাশ।

জামালগঞ্জ উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাকে ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। ত্যাগীদের ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে অনেক বিতর্কিত ব্যক্তিকে কমিটিতে জায়গা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কমিটিগুলোর একাধিক সদস্য আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন।

এ নিয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসহ স্থানীয় তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় বিএনপির অভিযোগ, কমিটিতে এমন ব্যক্তিদের স্থান দেওয়া হয়েছে যারা অতীতে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছেন। জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে পদ পাওয়া নবী হোসেন উত্তর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ-৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে আহ্বায়ক কমিটিতে কোনো সদস্যই নেওয়া হয়নি। এতে দলীয় আদর্শ ও নীতিনৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন একাধিক নেতা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণার পর থেকেই নেতাকর্মীদের ভেতর নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় এবং বিতর্কিতদের কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে। পক্ষান্তরে রাজপথে পরীক্ষিত-ত্যাগী, মামলায় জর্জরিত এবং পরীক্ষিত অনেক নেতাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা বিএনপির নেতারা জানান, জেলা বিএনপির কমিটি গঠিত হওয়ার পর থেকেই জেলাজুড়েই সমালোচনার ঝড় বইছে। কমিটিতে বেশ কয়েকজন বিতর্কিত ব্যক্তি জায়গা পেয়েছেন। বিএনপির নির্দেশ অমান্য করে সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সশরীরে প্রচার চালিয়েও কমিটিতে পদ পেয়েছেন।

২০১৮ সালের পর থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে তারা কেউই সক্রিয় ছিলেন না। নাটোরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে ব্যাপক অসংগতি রয়েছে। কমিটিতে বহিষ্কৃত মিজানুর রহমানকে (ডিউক) যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। অথচ তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি। মূল দলের নেতাদের বাদ দিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

এছাড়া বিতর্কিত ব্যবসায়ী আবুল কাশেমকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে ১ নম্বর সদস্য করা হয়েছে। অথচ এই নামে বিএনপির কোনো নেতাকে কেউ চেনেই না। রাজশাহী মহানগর বিএনপির কমিটিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের পদ দেওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

গাজীপুর জেলা বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ আওয়ামী নেতাদের দিয়ে উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি গঠন করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। তাই তাদের ঘোষিত কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। ঘোষিত কমিটিতে ত্যাগিদের মূল্যায়ন করা হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, কালিয়াকৈর পৌর ও উপজেলা কমিটি করা হয়েছে ও সদস্যও নেওয়া হয়েছে টাকার বিনিময়ে। শ্রীপুর ও গাজীপুর সদরেও ত্যাগীদের বাদ দিয়ে কমিটি দেওয়া হয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আক্তারুল আলম মাস্টার ও সদর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন রিজভী বিগত আন্দোলনে ব্যাপক ভূমিকা রাখলেও তাদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে আওয়ামী দালালদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা বিএনপিতে যাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে বিগত আন্দোলনে তার কোন ভূমিকা ছিল না। অথচ আক্তারুল আলম মাস্টার আন্দোলনসহ বিগত দিনে নেতাকর্মীদের সকল মামলা পরিচালনা করছেন নিজ খরচে।

সাবেক সভাপতি শাহজাহান ফকিরও বিগত দিনে জেল জুলুম খেটেছেন তাকেও জেলা কমিটিতে রাখা হয়নি। জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও সাবেক নির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান স্বপ্না বেগমসহ অংসখ্য ত্যাগী নেতাকর্মীকে কমিটিতে রাখা হয়নি। এদিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা ও অঙ্গ-সংগঠনের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হেলাল উদ্দিন বহু মামলার আসামি।

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে তিনবার কারা নির্যাতিত হন। তিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি-জিএস ছিলেন। ছিলেন ছাত্রদলের উপজেলা সভাপতি। তার স্থলে আহবায়ক করা হয়েছে নুরুল ইসলাম সরকারকে। তার ভাই কামাল সিকদার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি। পারভেজ আহমেদ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। বিগত সরকারের সময়ে তিনিও একাধিকবার জেল খেটেছেন। তাকে বাদ দিয়ে যাকে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব করা হয়েছে।

উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, গত ১৪ মে কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভাসহ জেলার আটটি ইউনিটের কমিটি বাতিল করে গাজীপুর জেলা বিএনপি। এরপর তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি। ঠিক এক মাস পর ১৪ জুন বিকেলে কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি ঘোষণা করা হয়।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদারকে, সদস্য সচিব করা হয়েছে এম আনোয়ার হোসেনকে। কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির আহবায়ক করা হয়েছে মামুদ সরকার ও সদস্য সচিব করা হয়েছে মহসিন উজ্জামানকে। তারা কেউই গত আন্দোলনে মাঠে ছিলেন না। পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বিগত সরকারের সময়ে আন্দোলনের জন্য জেল খেটেছেন। তার জায়গা হয়নি আহ্বায়ক কমিটিতে।

উপজেলা ও পৌর আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে গত ১৫ জুন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী পারভেজ আহমেদের পক্ষ নিয়ে আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। একই সময়ে নতুন কমিটির পক্ষে পাল্টা মিছিল হয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, গত জুন থেকে আগষ্ট মাস পযন্ত কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপি, কালিয়াকৈর পৌর বিএনপি ও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৫টি ওয়ার্ড এবং ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

এর মধ্যে সর্বশেষ ৮ আগস্ট মৌচাক, আটাবহ ও বোয়ালি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বোয়ালি ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক করা হয়েছে সুমীর কুমার গুহ আর সদস্য সচিব করা হয়েছে রিপন আল হাসানকে। বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ঘোষণার পর ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দীর্ঘদিন যারা জেল জুলুমের শিকার হয়ে রাজপথের রাজনীতি করে আসছে তারা কমিটি বাতিল চেয়ে বিক্ষোভ করেছে।

বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম খান বলেন, দল করতে গিয়ে জেল খেটেছি। জেলে থাকায় মায়ের মৃত্যুর আগে শেষ কথাটাও বলতে পারিনি। ডান্ডাবেরি আর হাতকড়া লাগিয়ে মায়ের জানাজা পড়েছি। তারপরও কমিটিতে যোগ্য মর্যাদা দেয়া হয়নি। দলের জন্য আর কি করলে আমাদের মতো নেতার জায়গা হবে-প্রশ্ন রাখেন তিনি। চাপাইর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ডিজে রাব্বানি ও ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপি জালাল উদ্দিন আন্দোলনের কারণে দীর্ঘ আট মাস কারাবরণ করেছেন। তবুও তাদের জায়গা হয়নি ইউনিয়ন কমিটি ও উপজেলার আহবায়ক কমিটিতে।

তারেক রহমানের কাছে অভিযোগ : বিগত সময়ে নিষ্ক্রীয় নেতাদের কমিটিতে রাখায় কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরবিএনপির নেতারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে সম্প্রতি দুইটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সে অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৪ জনু কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট যে আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সে কমিটির ত্রুটি-বিচ্যুতির বিষয়ে ২৬ জুন আপনাকে (তারেক রহমান) অবগত করা হয়েছে।

পরবর্তীতে কমিটির সদস্যদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে দিয়ে দেখা যায় উপজেলা কমিটির বেশিরভাগ সদস্য বিগত ১৬ বছর সরকার বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে নিক্রিয়, ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেছে। তারা এলাকায় সর্বমহলে বিতর্কিত। যেখানে আওয়ামী সংশ্লিষ্ট, নিস্ক্রিয় ও সুবিধাভোগীদের কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। সেখানে আমরা মাসের পর মাস রাজনৈতিক কারণে কারাবরণ করলেও আমরাসহ অনেক ত্যাগী ও নিযাতিত নেতাকর্মীদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত বিতর্কিতদের বিষয়ে আরো তথ্য আওয়ামী সংশ্লিষ্ট স্থিরচিত্র ও উপযুক্ত প্রমাণাদি তদন্তকালে সরবরাহ করা হবে। ওই অভিযোগটিতে স্বাক্ষর করেছেন কালিয়াকৈর উপজেলার বিএনপির পক্ষে চাপাইর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ডিজি রাব্বানী এবং ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন আহম্মেদ। তারা উপজেলা বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ ১৭ জনকে ফ্যাসিষ্ট সরকারের সঙ্গে আতাত করে চলেছেন বলে চিহ্নিত করে ওই অভিযোগ উল্লেখ করেছেন।

এছাড়া একই সময়ে তারেক রহমানের কাছে পৃথক অভিযোগ দিয়েছে কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি অভিযোগে পৌর বিএনপির আহবায়ক, সদস্য সচিবসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও নির্বাচনের প্রচারণা করার ছবি সংযুক্ত করে অভিযোগটি দাখিল করেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 04:52:23 am, Tuesday, 2 September 2025
58 Time View

মাঠে থাকা ত্যাগীরা পদবঞ্চিত হয়ে বিপদের সম্মূখীন, তৃণমূল পর্যায়ে পদে বিতর্কিতরা

Update Time : 04:52:23 am, Tuesday, 2 September 2025

 

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজনৈতক মাঠে থাকা ত্যাগী, পরীক্ষিত ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের উপক্ষো করে অনেক বিতর্কিত ব্যক্তিকে উপজেলা, ইউনিয়ন কমিটিতে জায়গা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল পর্যায়ে বেশ কয়েকটি জেলা-উপজেলার বিএনপির নেতৃবৃন্দের ওপর। বিতর্কিতরা পেয়েছে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ আর বিগত ১৬ বছর হামলা-মামলা, জেল-জুলুমসহ নানা চড়াই-উৎরাই পেড়িয়ে আন্দোলন সংগ্রামে রাজনৈতক মাঠে থাকা ত্যাগীরা পদবঞ্চিত হয়ে বিপদের সম্মূখীন।

অভিযোগ রয়েছে, দুঃসময় দলের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা ব্যক্তিরা ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসরাও স্থান পেয়েছে থানা ও ইউনিয়ন কমিটিতে। অভিযোগ উঠেছে গাজীপুর, জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নাটোর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, বরিশাল জেলাসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলার থানা ও ইউনিয়ন কমিটিতে বিতর্কিতরা স্থান পেয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন কমিটি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে।

এ অভিযোগ জানিয়েছেন খোদ বরিশাল জেলা দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম রাজন। তিনি বলেছেন, অর্থেও বিনিময়ে বাকেরগঞ্জের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে কমিটিতে ফ্যাসিস্ট দোসরদের পদ দেওয়া হয়েছে। এসব কমিটি বাতিল করতে হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে উপজেলা বিএনপির সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কৃত নেতা মাহাবুবুল হাসানকে কমিটির সহসভাপতি করা হয়েছে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কমিটির। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।

২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

এ বিষয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, বহিষ্কৃত নেতা মাহাবুবকে পদ দেওয়া গঠনতন্ত্রবিরোধী। একজন নেতার বহিষ্কার আদেশ থাকার পরও কিভাবে নতুন কমিটিতে ঠাঁই হয়, এটা আমাদের বোধগম্য নয়। যে লোক আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চলেছেন, আওয়ামী লীগের দোসরকে পদে দেওয়ায় ত্যাগী নেতাকর্মীরা হতাশ।

জামালগঞ্জ উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাকে ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। ত্যাগীদের ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে অনেক বিতর্কিত ব্যক্তিকে কমিটিতে জায়গা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কমিটিগুলোর একাধিক সদস্য আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন।

এ নিয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসহ স্থানীয় তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় বিএনপির অভিযোগ, কমিটিতে এমন ব্যক্তিদের স্থান দেওয়া হয়েছে যারা অতীতে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছেন। জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে পদ পাওয়া নবী হোসেন উত্তর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ-৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে আহ্বায়ক কমিটিতে কোনো সদস্যই নেওয়া হয়নি। এতে দলীয় আদর্শ ও নীতিনৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন একাধিক নেতা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণার পর থেকেই নেতাকর্মীদের ভেতর নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় এবং বিতর্কিতদের কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে। পক্ষান্তরে রাজপথে পরীক্ষিত-ত্যাগী, মামলায় জর্জরিত এবং পরীক্ষিত অনেক নেতাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা বিএনপির নেতারা জানান, জেলা বিএনপির কমিটি গঠিত হওয়ার পর থেকেই জেলাজুড়েই সমালোচনার ঝড় বইছে। কমিটিতে বেশ কয়েকজন বিতর্কিত ব্যক্তি জায়গা পেয়েছেন। বিএনপির নির্দেশ অমান্য করে সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সশরীরে প্রচার চালিয়েও কমিটিতে পদ পেয়েছেন।

২০১৮ সালের পর থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে তারা কেউই সক্রিয় ছিলেন না। নাটোরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে ব্যাপক অসংগতি রয়েছে। কমিটিতে বহিষ্কৃত মিজানুর রহমানকে (ডিউক) যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। অথচ তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি। মূল দলের নেতাদের বাদ দিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

এছাড়া বিতর্কিত ব্যবসায়ী আবুল কাশেমকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে ১ নম্বর সদস্য করা হয়েছে। অথচ এই নামে বিএনপির কোনো নেতাকে কেউ চেনেই না। রাজশাহী মহানগর বিএনপির কমিটিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের পদ দেওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

গাজীপুর জেলা বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ আওয়ামী নেতাদের দিয়ে উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি গঠন করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। তাই তাদের ঘোষিত কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। ঘোষিত কমিটিতে ত্যাগিদের মূল্যায়ন করা হয়নি।

অভিযোগ রয়েছে, কালিয়াকৈর পৌর ও উপজেলা কমিটি করা হয়েছে ও সদস্যও নেওয়া হয়েছে টাকার বিনিময়ে। শ্রীপুর ও গাজীপুর সদরেও ত্যাগীদের বাদ দিয়ে কমিটি দেওয়া হয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আক্তারুল আলম মাস্টার ও সদর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদিন রিজভী বিগত আন্দোলনে ব্যাপক ভূমিকা রাখলেও তাদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে আওয়ামী দালালদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা বিএনপিতে যাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে বিগত আন্দোলনে তার কোন ভূমিকা ছিল না। অথচ আক্তারুল আলম মাস্টার আন্দোলনসহ বিগত দিনে নেতাকর্মীদের সকল মামলা পরিচালনা করছেন নিজ খরচে।

সাবেক সভাপতি শাহজাহান ফকিরও বিগত দিনে জেল জুলুম খেটেছেন তাকেও জেলা কমিটিতে রাখা হয়নি। জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ও সাবেক নির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান স্বপ্না বেগমসহ অংসখ্য ত্যাগী নেতাকর্মীকে কমিটিতে রাখা হয়নি। এদিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা ও অঙ্গ-সংগঠনের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হেলাল উদ্দিন বহু মামলার আসামি।

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে তিনবার কারা নির্যাতিত হন। তিনি উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি-জিএস ছিলেন। ছিলেন ছাত্রদলের উপজেলা সভাপতি। তার স্থলে আহবায়ক করা হয়েছে নুরুল ইসলাম সরকারকে। তার ভাই কামাল সিকদার থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি। পারভেজ আহমেদ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ছিলেন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। বিগত সরকারের সময়ে তিনিও একাধিকবার জেল খেটেছেন। তাকে বাদ দিয়ে যাকে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব করা হয়েছে।

উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, গত ১৪ মে কালিয়াকৈর উপজেলা, পৌরসভাসহ জেলার আটটি ইউনিটের কমিটি বাতিল করে গাজীপুর জেলা বিএনপি। এরপর তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বৈঠক করে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি। ঠিক এক মাস পর ১৪ জুন বিকেলে কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি ঘোষণা করা হয়।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক করা হয়েছে মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সিকদারকে, সদস্য সচিব করা হয়েছে এম আনোয়ার হোসেনকে। কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির আহবায়ক করা হয়েছে মামুদ সরকার ও সদস্য সচিব করা হয়েছে মহসিন উজ্জামানকে। তারা কেউই গত আন্দোলনে মাঠে ছিলেন না। পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বিগত সরকারের সময়ে আন্দোলনের জন্য জেল খেটেছেন। তার জায়গা হয়নি আহ্বায়ক কমিটিতে।

উপজেলা ও পৌর আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে গত ১৫ জুন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী পারভেজ আহমেদের পক্ষ নিয়ে আহবায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। একই সময়ে নতুন কমিটির পক্ষে পাল্টা মিছিল হয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, গত জুন থেকে আগষ্ট মাস পযন্ত কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপি, কালিয়াকৈর পৌর বিএনপি ও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৫টি ওয়ার্ড এবং ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

এর মধ্যে সর্বশেষ ৮ আগস্ট মৌচাক, আটাবহ ও বোয়ালি ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বোয়ালি ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক করা হয়েছে সুমীর কুমার গুহ আর সদস্য সচিব করা হয়েছে রিপন আল হাসানকে। বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি ঘোষণার পর ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দীর্ঘদিন যারা জেল জুলুমের শিকার হয়ে রাজপথের রাজনীতি করে আসছে তারা কমিটি বাতিল চেয়ে বিক্ষোভ করেছে।

বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম খান বলেন, দল করতে গিয়ে জেল খেটেছি। জেলে থাকায় মায়ের মৃত্যুর আগে শেষ কথাটাও বলতে পারিনি। ডান্ডাবেরি আর হাতকড়া লাগিয়ে মায়ের জানাজা পড়েছি। তারপরও কমিটিতে যোগ্য মর্যাদা দেয়া হয়নি। দলের জন্য আর কি করলে আমাদের মতো নেতার জায়গা হবে-প্রশ্ন রাখেন তিনি। চাপাইর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ডিজে রাব্বানি ও ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপি জালাল উদ্দিন আন্দোলনের কারণে দীর্ঘ আট মাস কারাবরণ করেছেন। তবুও তাদের জায়গা হয়নি ইউনিয়ন কমিটি ও উপজেলার আহবায়ক কমিটিতে।

তারেক রহমানের কাছে অভিযোগ : বিগত সময়ে নিষ্ক্রীয় নেতাদের কমিটিতে রাখায় কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌরবিএনপির নেতারা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে সম্প্রতি দুইটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সে অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৪ জনু কালিয়াকৈর উপজেলা বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট যে আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সে কমিটির ত্রুটি-বিচ্যুতির বিষয়ে ২৬ জুন আপনাকে (তারেক রহমান) অবগত করা হয়েছে।

পরবর্তীতে কমিটির সদস্যদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে দিয়ে দেখা যায় উপজেলা কমিটির বেশিরভাগ সদস্য বিগত ১৬ বছর সরকার বিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে নিক্রিয়, ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেছে। তারা এলাকায় সর্বমহলে বিতর্কিত। যেখানে আওয়ামী সংশ্লিষ্ট, নিস্ক্রিয় ও সুবিধাভোগীদের কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। সেখানে আমরা মাসের পর মাস রাজনৈতিক কারণে কারাবরণ করলেও আমরাসহ অনেক ত্যাগী ও নিযাতিত নেতাকর্মীদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত বিতর্কিতদের বিষয়ে আরো তথ্য আওয়ামী সংশ্লিষ্ট স্থিরচিত্র ও উপযুক্ত প্রমাণাদি তদন্তকালে সরবরাহ করা হবে। ওই অভিযোগটিতে স্বাক্ষর করেছেন কালিয়াকৈর উপজেলার বিএনপির পক্ষে চাপাইর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ডিজি রাব্বানী এবং ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন আহম্মেদ। তারা উপজেলা বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ ১৭ জনকে ফ্যাসিষ্ট সরকারের সঙ্গে আতাত করে চলেছেন বলে চিহ্নিত করে ওই অভিযোগ উল্লেখ করেছেন।

এছাড়া একই সময়ে তারেক রহমানের কাছে পৃথক অভিযোগ দিয়েছে কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি অভিযোগে পৌর বিএনপির আহবায়ক, সদস্য সচিবসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও নির্বাচনের প্রচারণা করার ছবি সংযুক্ত করে অভিযোগটি দাখিল করেন।