কুতুবদিয়ায় পর্যটন কেন্দ্রের উদ্বোধন,মেতে উঠল পুরো দ্বীপ

মো.আজিজ কুতুবী, কুতুবদিয়া:
কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় পর্যটন কেন্দ্র লাইটহাউস সী-বিচ উদ্বোধন করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর ২০২৫) বিকালে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ ধুরুং বাতিঘর পয়েন্টে নতুন পর্যটন কেন্দ্রের উদ্বোধন ঘোষণা করেন,উপজেলা নির্বাহী অফিসার ক্যথোয়াইপ্রু মারমা।
দ্বীপ কন্যা কুতুবদিয়ার পশ্চিম পাশে ২৩ কিলোমিটার বালিয়াড়ি সৈকত জুড়ে পর্যটন সম্ভাবনাময় হলেও গড়ে ওঠেনি সুস্থ বিনোদন কেন্দ্র। অবশেষে দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বিখ্যাত বাতিঘরের পাশে মিনি পর্যটন কেন্দ্রে চালু করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ক্যথোয়াইপ্রু মারমা বলেন,অপার সম্ভাবনাময় পর্যটনের যাত্রা শুরু হয়েছে আজ থেকে। স্থানীয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় দ্বীপের উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রাখবে এই লাইটহাউস সী-বিচ। ফলে অর্থনৈতিক জোগান হবে এই বিনোদন কেন্দ্রকে ঘিরে।
এতে,স্বাগত বক্তব্যে প্রধান উদ্যোক্তা দক্ষিণ ধুরুং ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, সম্ভাবনার মায়া দ্বীপ কুতুবদিয়ায় প্রকৃতির দানে বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি রয়েছে। আমরা শুরু করেছি। জনগণ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় বিষয়টি গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করে এর প্রসার ঘটাতে হবে। সৃষ্টি হবে বিভিন্ন কর্মসংস্থান। একদিন হয়তো ভ্রমণপিপাসুরা সেন্টমার্টিন না গিয়ে সাগর কন্যা কুতুবদিয়া ভ্রমণ করবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, থানার ওসি মো: মাহবুবুল হক, উপজেলা প্রকৌশলী আবু সউদ্দিন, ধুরুং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মোর্শেদুল আলম, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো: ফরহাদ মিয়া প্রমুখ । লাইটহাউস সী-বিচ উদ্বোধনী উৎসবমুখর দিনে মেতে উঠল পুরো দ্বীপ।
এতে, উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার, হাজার নারী, পুরুষ ও শিশুরা জমায়েত হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আর রাতে আতশবাজিতে জমে ওঠে পুরো আয়োজন।
এদিকে উদ্বোধনের আগে থেকে,, ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত দৃষ্টিনন্দন স্পট কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার দক্ষিণ ধূরুং ইউনিয়নের আলী ফকির ডেইল এলাকায় পুনঃনির্মিত দৃষ্টিনন্দন লাইট হাউজ এ্যান্ড কোস্টাল রেডিও স্টেশন ( বাতিঘর)ও সমুদ্র সৈকত।নতুন সাজে সজ্জিত হচ্ছে সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট বাতিঘর ও সমুদ্র সৈকত, ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারণায় প্রতিদিনই লোকে লোকারন্য হয়ে উঠেছে।
সারি সারি ঝাউ বাগান ও বালুময় দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও বাতিঘর ভ্রমণ পিপাসুদের মন জুড়ানো পর্যটন কেন্দ্রে হিসেবে বেশ পরিচিতি লাভ করেছে।কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, পতেঙ্গা সী-বীচ ও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ছাড়াও দেশের স্বল্প পরিচিত সমুদ্র সৈকতের মধ্যে অন্যতম ও পর্যটন স্পট হচ্ছে সমুদ্র সৈকত হচ্ছে দ্বীপ কুতুবদিয়া সী বীচ ও বাতিঘর।
বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপে রয়েছে শতবর্ষী ঐতিহ্যের বাতিঘর। আছে ব্যস্ত শুটকি পল্লী আর দেশের একমাত্র উপকূলীয় বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প। এসব নিয়ে গড়ে উঠছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র-যা দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসুদের আকর্ষণের কেন্দ্র হতে পারে বলে আশা স্থানীয়দের।প্রতিদিন শত শত লোকের পদচারণায় মুখর থাকছে এ পর্যটন স্পটটি। ভ্রমণ পিপাসুরা সারি সারি ঝাউগাছের শীতল বাতাস ও সমুদ্রের জোয়ারের ঢেউয়ের তরঙ্গের সামনে সৈকতে ঝাঁকেঝাঁকে লাল কাঁকড়ার দৌঁড়ঝাপ দৃশ্য উপভোগ করার পাশাপাশি সূর্যাস্তের সময় আপনজনদের সাথে ছবি-সেলফি ও ভিডিও ধারণের মধ্যদিয়ে চমৎকার আনন্দ উপভোগ করতে ভিড় জমায় পর্যটকরা। এছাড়াও সেখানে গড়ে উঠছে অস্থায়ী ঝাল বিতান, চটপটি, কপি হাউজ,চায়ের দোকান সহ বসানো হয়েছে ঘূর্ণিয়মান দোলনা।দিগন্ত বিস্তৃত সাগরের বুকে সূর্যাস্তের দৃশ্য, লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ বা ছোট -বড় সবাই দলবেঁধে ফুটবল, ক্রিকেটে মেতে ওঠা ও সমুদ্রের ঢেউয়ের তরঙ্গের দৃশ্য পর্যটকদের দেয় মহা আনন্দ। সেরা ট্যুর প্যাকেজ
এছাড়া, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্ব পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ছুটে এসেছে। ভ্রমণ পিপাসুরা একটু ক্লান্তি দূর করতে ছুটে আসেন সমুদ্র সৈকতে । অনেকেই প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে সজ্জিত সাগর কন্যাকে উপভোগ করছেন।আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। দক্ষিণের উষ্ণ নির্মল বাতাস, সাগরের নীল জলরাশি । সুমদ্র সৈকতে এসে এসব দৃশ্য উপভোগ করতে পেরে অনেকেই মুগ্ধ। অনেকে প্রিয়জনদের সঙ্গে সৈকতে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কেউ আবার সৈকতের মুক্ত হাওয়ায় বসে উপভোগ করছেন প্রকৃতি।
সরেজমিনে,কয়েকজন পর্যটকের সাথে কথা বলে জানা যায়, সময় ও কর্ম ব্যস্থতায় কারণে দূরবর্তী কোনো পর্যটন স্পটে যেতে আগ্রহী নয়। আর কম খরচে ও স্বল্প সময়ের মধ্যে কুতুবদিয়া সমুদ্র সৈকতে এসে আনন্দ উপভোগ করতে পেরে আনন্দিত।এছাড়াও এই কুতুবদিয়া আসার পথে চ্যানেল যাত্রা নি:সন্দেহ নান্দনিক। প্রাকৃতির নয়নাভিরাম অপরুপ সৌন্দর্যে আপনাকে বিমোচিত করবে।শীতকাল ছাড়া বছরের অন্যান্য সময় সাগর একটু উত্তাল থাকে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আযাদের উদ্দ্যোগে উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত সবার কাছে বিনোদন এবং পর্যটন স্পটে রূপ নেওয়াতে এবার প্রচুর লোক সমাগম হয়েছে। বাতিঘর এলাকাকে ঘিরে গড়ে উঠা সমুদ্র সৈকতে বসানো হয়েছে কিটকট ছাতাযুক্ত চেয়ার। সেলফি জোন।সমুদ্র সৈকত ও সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট গুলোতে আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও পর্যটন শিল্প প্রসারের লক্ষ্যে সার্বক্ষণিক গ্রাম পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।























