5:16 am, Sunday, 21 December 2025

মায়ের জন্য ব্যাকুলতা: এক অমলিন অনুভূতির প্রতিচ্ছবি

Picsart 25 12 05 22 35 05 478

 

এম রাসেল সরকার:
তারেক নামটি হয়তো অনেকের কাছে সাধারণ, কিন্তু “মায়ের জন্য তারেকের ব্যাকুলতা” এই শব্দগুচ্ছটি এক গভীর, সর্বজনীন এবং চিরন্তন সত্যকে তুলে ধরে। এই ব্যাকুলতা কেবল একজন সন্তানের মায়ের প্রতি ভালোবাসা নয়, বরং এটি মানব জীবনের এক মৌলিক টান, এক অদৃশ্য বাঁধন যা পৃথিবীর অন্য সব সম্পর্ককে ছাপিয়ে যায়। ব্যাকুলতা শব্দটির মধ্যে লুকিয়ে আছে এক ধরণের অস্থিরতা, এক তীব্র আকাঙ্ক্ষা। তারেকের জীবনে মা শুধু একজন অভিভাবক নন, মা যেন তার অস্তিত্বের কেন্দ্রবিন্দু। যখনই মা দৃষ্টির আড়ালে যান, তারেকের ভেতরের পৃথিবীটা যেন থমকে যায়। এই অনুভূতিতে কোনো কৃত্রিমতা নেই, আছে কেবল নির্ভরতার খোঁজ।

মায়ের হাতের স্পর্শ, সেই চিরচেনা গন্ধ, বকুনি কিংবা আদর—সবকিছুই তারেকের কাছে অমূল্য। মায়ের অনুপস্থিতিতে তারেকের এই ব্যাকুলতা প্রমাণ করে যে, মা ছাড়া সন্তানের জগৎটা কতটা অসম্পূর্ণ। আধুনিকতার এই যুগে আমরা যতই ব্যস্ত হয়ে পড়ি না কেন, মায়ের প্রতি এই টান কখনো পুরনো হয় না। তারেকের এই ব্যাকুলতা আসলে প্রতিটি সন্তানের হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মাতৃত্বের শক্তি কতটা বিশাল এবং সন্তানের জীবনে মায়ের ভূমিকা কতটা অপরিহার্য। এই ব্যাকুলতাকে সম্মান জানানো মানে জীবনের মূল স্রোতকে সম্মান জানানো। মা-ই তো সেই আশ্রয়, যেখানে ফিরলে সব ক্লান্তি দূর হয়। তারেকের এই অনুভূতি তাই কেবল তার একার নয়, এটি মানবজাতির এক শাশ্বত আর্তি।

‘মা কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু যেন ভাই/ইহার চেয়ে নাম যে মধুর ত্রিভুবনে নাই’। কবি কাজী কাদের নেওয়াজের কবিতার এই পঙক্তিই যেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অসুস্থ মা বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলার আকুতির প্রকাশ ঘটেছে।

মায়ের প্রতি সন্তানের দায়বদ্ধতা, নির্ভরতা, নিঃশর্ত ভালোবাসা, অসুস্থ মা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করার লক্ষ্যে তারেক রহমানের প্রাণান্তকর চেষ্টাই সে প্রমাণ দেয়। বেগম খালেদা জিয়া হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিসসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। কয়েক দিন ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে রয়েছেন। অসুস্থ মাকে সুস্থ করে তোলার জন্য বিদেশ ভূঁইয়ে থেকেই একমাত্র সন্তান তারেক রহমান সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন কোনো চেষ্টা নেই যে, তিনি মাকে সুস্থ করে তোলার জন্য করছেন না।

বাংলাদেশের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দিচ্ছেন। পাশাপাশি তারেক রহমানে যুক্তরাজ্য থেকে বিশ্ববরেণ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় পাঠিয়েছেন। শুধু তাই নয়, চীন থেকেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে মাকে সুস্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু কি তাই? অসুস্থ রোগীর বিমানে উঠার পরিস্থিতি নেই, তারপরও উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে মাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। অসুস্থ মায়ের জন্য বেদনার্ত পুত্রের এমন চেষ্টা উদাহরণ হওয়ার মতোই।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকালও বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ। চিকিৎসকরা যদি নিশ্চিত করেন, তিনি বিমানে ওঠার জন্য উপযুক্ত, তাহলেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে লন্ডনে নেয়া হবে। বিমানে উঠার মতো অবস্থা নেই; তারপরও পুত্র তারেক রহমান মায়ের জন্য, মাকে সুস্থ করে তোলার জন্য লন্ডনে নেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।

বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেত্রী নন, তিনি জাতির অভিভাবক। তার অসুস্থতায় গোটা জাতি ব্যথিত, দুঃখে ভারাক্রান্ত। দুঃখজনক হলেও সত্য, ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে বেগম জিয়াকে বন্দি করে কারাগারে রাখার সময় সুচিকিৎসায় বাধা দেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, বেগম জিয়ার যে রোগ সে চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেয়া আবশ্যক। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনা কোনোভাবেই বেগম জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দেননি। বেগম খালেদা জিয়া ওই সময় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেলে এখন তার শরীরে এত খারাপ অবস্থা হতো না।

দেশ-বিদেশের চিকিৎসকরাও এমনটিই জানিয়েছেন। সময়মতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হলে বেগম খালেদা জিয়ার শরীর এত খারাপ হতো না। দেশ ও দেশের জনগণের অভিভাবকতুল্য নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ। গতকালও তার রোগমুক্তির জন্য সারা দেশের লাখো মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মায়ের এমন অবস্থার পরও বেদনার্ত ছেলে তারেক রহমান হাল ছাড়েননি। অসুস্থ মায়ের সর্বোচ্চ চিকিৎসা করাচ্ছেন। এর আগে ২৯ নভেম্বর লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান দেশে ফিরতে না পারার অসহায়ত্ব তুলে ধরেন। তিনি জানান, ‘দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ তার একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়’।

নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরে মায়ের জন্য বেদনার্ত পুত্র তারেক রহমান দেশে ফেরা নিয়ে বলেন, ‘সংকটকালে মায়ের স্নেহ-স্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাক্সক্ষা যেকোনো সন্তানের মতো আমারও রয়েছে। কিন্তু অন্য আর সবার মতো এটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।’ এতেই প্রকাশ পায় মায়ের জন্য একজন পুত্রের কত দায়বদ্ধতা ও মমত্ববোধ। মায়ের জন্য তারেক রহমান এখন বিনিদ্র রজনী পার করছেন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়; অথচ এক শ্রেণির বিবেকহীন ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ‘অসুস্থ মায়ের পাশে তারেক নেই কেন?’ এমন প্রশ্ন তুলছেন। মায়ের প্রতি তারেক রহমানের দায়িত্ব পালন এবং মা ও ছেলের সম্পর্কের নিঃশর্ত গভীরতা, ভালোবাসা, নির্ভরতা ও শ্রদ্ধার কমতি নেই।

মানুষের হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে। চিকিৎসকরা চিকিৎসা করে রোগীকে সারিয়ে তুললেও কখন কার মৃত্যু হবে তা মহান আল্লাহই জানেন। তারপরও রোগ হলে চিকিৎসা করানো হয়; চিকিৎসায় রোগী আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে উঠেন। চিকিৎসকদের পরিভাষায় বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়া সিসিইউতে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় রয়েছেন।

এমন ক্রিটিক্যাল অবস্থায় বর্তমানে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ। চলতি বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি ওই হাসপাতালে লাইভ সাপোর্টে রয়েছেন। এর আগে দেশবরেণ্য লালন সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা পারভীন রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছিলেন। বহু রোগী এমন আইসিইউ, সিসিইউতে থেকে সুস্থ হয়ে পরিবারের কাছে ফিরে আসেন। কেউ কেউ ফিরে আসেন না। এটি বাস্তবতা।

বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং পরিবার ও দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাবেন, সে প্রত্যাশা সবার। তবে পুত্র হিসেবে তারেক রহমানের মায়ের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা, আবেগ ও অনুভূতি দেশবাসীকেও গভীর ভাবে স্পর্শ করছে।

লেখক:
এম রাসেল সরকার
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 04:38:09 pm, Friday, 5 December 2025
219 Time View

মায়ের জন্য ব্যাকুলতা: এক অমলিন অনুভূতির প্রতিচ্ছবি

Update Time : 04:38:09 pm, Friday, 5 December 2025

 

এম রাসেল সরকার:
তারেক নামটি হয়তো অনেকের কাছে সাধারণ, কিন্তু “মায়ের জন্য তারেকের ব্যাকুলতা” এই শব্দগুচ্ছটি এক গভীর, সর্বজনীন এবং চিরন্তন সত্যকে তুলে ধরে। এই ব্যাকুলতা কেবল একজন সন্তানের মায়ের প্রতি ভালোবাসা নয়, বরং এটি মানব জীবনের এক মৌলিক টান, এক অদৃশ্য বাঁধন যা পৃথিবীর অন্য সব সম্পর্ককে ছাপিয়ে যায়। ব্যাকুলতা শব্দটির মধ্যে লুকিয়ে আছে এক ধরণের অস্থিরতা, এক তীব্র আকাঙ্ক্ষা। তারেকের জীবনে মা শুধু একজন অভিভাবক নন, মা যেন তার অস্তিত্বের কেন্দ্রবিন্দু। যখনই মা দৃষ্টির আড়ালে যান, তারেকের ভেতরের পৃথিবীটা যেন থমকে যায়। এই অনুভূতিতে কোনো কৃত্রিমতা নেই, আছে কেবল নির্ভরতার খোঁজ।

মায়ের হাতের স্পর্শ, সেই চিরচেনা গন্ধ, বকুনি কিংবা আদর—সবকিছুই তারেকের কাছে অমূল্য। মায়ের অনুপস্থিতিতে তারেকের এই ব্যাকুলতা প্রমাণ করে যে, মা ছাড়া সন্তানের জগৎটা কতটা অসম্পূর্ণ। আধুনিকতার এই যুগে আমরা যতই ব্যস্ত হয়ে পড়ি না কেন, মায়ের প্রতি এই টান কখনো পুরনো হয় না। তারেকের এই ব্যাকুলতা আসলে প্রতিটি সন্তানের হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মাতৃত্বের শক্তি কতটা বিশাল এবং সন্তানের জীবনে মায়ের ভূমিকা কতটা অপরিহার্য। এই ব্যাকুলতাকে সম্মান জানানো মানে জীবনের মূল স্রোতকে সম্মান জানানো। মা-ই তো সেই আশ্রয়, যেখানে ফিরলে সব ক্লান্তি দূর হয়। তারেকের এই অনুভূতি তাই কেবল তার একার নয়, এটি মানবজাতির এক শাশ্বত আর্তি।

‘মা কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু যেন ভাই/ইহার চেয়ে নাম যে মধুর ত্রিভুবনে নাই’। কবি কাজী কাদের নেওয়াজের কবিতার এই পঙক্তিই যেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অসুস্থ মা বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলার আকুতির প্রকাশ ঘটেছে।

মায়ের প্রতি সন্তানের দায়বদ্ধতা, নির্ভরতা, নিঃশর্ত ভালোবাসা, অসুস্থ মা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করার লক্ষ্যে তারেক রহমানের প্রাণান্তকর চেষ্টাই সে প্রমাণ দেয়। বেগম খালেদা জিয়া হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিসসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। কয়েক দিন ধরে এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে রয়েছেন। অসুস্থ মাকে সুস্থ করে তোলার জন্য বিদেশ ভূঁইয়ে থেকেই একমাত্র সন্তান তারেক রহমান সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন কোনো চেষ্টা নেই যে, তিনি মাকে সুস্থ করে তোলার জন্য করছেন না।

বাংলাদেশের কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খালেদা জিয়ার চিকিৎসা দিচ্ছেন। পাশাপাশি তারেক রহমানে যুক্তরাজ্য থেকে বিশ্ববরেণ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঢাকায় পাঠিয়েছেন। শুধু তাই নয়, চীন থেকেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে মাকে সুস্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু কি তাই? অসুস্থ রোগীর বিমানে উঠার পরিস্থিতি নেই, তারপরও উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে মাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে লন্ডনে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। অসুস্থ মায়ের জন্য বেদনার্ত পুত্রের এমন চেষ্টা উদাহরণ হওয়ার মতোই।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকালও বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ। চিকিৎসকরা যদি নিশ্চিত করেন, তিনি বিমানে ওঠার জন্য উপযুক্ত, তাহলেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে লন্ডনে নেয়া হবে। বিমানে উঠার মতো অবস্থা নেই; তারপরও পুত্র তারেক রহমান মায়ের জন্য, মাকে সুস্থ করে তোলার জন্য লন্ডনে নেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন।

বেগম খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেত্রী নন, তিনি জাতির অভিভাবক। তার অসুস্থতায় গোটা জাতি ব্যথিত, দুঃখে ভারাক্রান্ত। দুঃখজনক হলেও সত্য, ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে বেগম জিয়াকে বন্দি করে কারাগারে রাখার সময় সুচিকিৎসায় বাধা দেয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, বেগম জিয়ার যে রোগ সে চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেয়া আবশ্যক। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনা কোনোভাবেই বেগম জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দেননি। বেগম খালেদা জিয়া ওই সময় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেলে এখন তার শরীরে এত খারাপ অবস্থা হতো না।

দেশ-বিদেশের চিকিৎসকরাও এমনটিই জানিয়েছেন। সময়মতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হলে বেগম খালেদা জিয়ার শরীর এত খারাপ হতো না। দেশ ও দেশের জনগণের অভিভাবকতুল্য নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা খুবই খারাপ। গতকালও তার রোগমুক্তির জন্য সারা দেশের লাখো মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। মায়ের এমন অবস্থার পরও বেদনার্ত ছেলে তারেক রহমান হাল ছাড়েননি। অসুস্থ মায়ের সর্বোচ্চ চিকিৎসা করাচ্ছেন। এর আগে ২৯ নভেম্বর লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান দেশে ফিরতে না পারার অসহায়ত্ব তুলে ধরেন। তিনি জানান, ‘দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ তার একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়’।

নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরে মায়ের জন্য বেদনার্ত পুত্র তারেক রহমান দেশে ফেরা নিয়ে বলেন, ‘সংকটকালে মায়ের স্নেহ-স্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাক্সক্ষা যেকোনো সন্তানের মতো আমারও রয়েছে। কিন্তু অন্য আর সবার মতো এটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমার একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।’ এতেই প্রকাশ পায় মায়ের জন্য একজন পুত্রের কত দায়বদ্ধতা ও মমত্ববোধ। মায়ের জন্য তারেক রহমান এখন বিনিদ্র রজনী পার করছেন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়; অথচ এক শ্রেণির বিবেকহীন ব্যক্তি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ‘অসুস্থ মায়ের পাশে তারেক নেই কেন?’ এমন প্রশ্ন তুলছেন। মায়ের প্রতি তারেক রহমানের দায়িত্ব পালন এবং মা ও ছেলের সম্পর্কের নিঃশর্ত গভীরতা, ভালোবাসা, নির্ভরতা ও শ্রদ্ধার কমতি নেই।

মানুষের হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে। চিকিৎসকরা চিকিৎসা করে রোগীকে সারিয়ে তুললেও কখন কার মৃত্যু হবে তা মহান আল্লাহই জানেন। তারপরও রোগ হলে চিকিৎসা করানো হয়; চিকিৎসায় রোগী আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়ে উঠেন। চিকিৎসকদের পরিভাষায় বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়া সিসিইউতে ক্রিটিক্যাল অবস্থায় রয়েছেন।

এমন ক্রিটিক্যাল অবস্থায় বর্তমানে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ। চলতি বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি ওই হাসপাতালে লাইভ সাপোর্টে রয়েছেন। এর আগে দেশবরেণ্য লালন সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা পারভীন রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছিলেন। বহু রোগী এমন আইসিইউ, সিসিইউতে থেকে সুস্থ হয়ে পরিবারের কাছে ফিরে আসেন। কেউ কেউ ফিরে আসেন না। এটি বাস্তবতা।

বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং পরিবার ও দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাবেন, সে প্রত্যাশা সবার। তবে পুত্র হিসেবে তারেক রহমানের মায়ের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা, আবেগ ও অনুভূতি দেশবাসীকেও গভীর ভাবে স্পর্শ করছে।

লেখক:
এম রাসেল সরকার
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।