4:53 am, Saturday, 22 November 2025

নামাজ পড়াতে যাওয়ার পথে পুলিশের আক্রমণের শিকার হলেন মসজিদের ইমাম: মাওলানা আবু রায়হান

Untitled Design 44 585x329 1

 

ডেস্ক রিপোর্ট:
রাজধানীর পান্থপথে মসজিদের ইমাম নামাজ পড়াতে যাওয়ার পথে পুলিশের অমানবিক আক্রমণের শিকার হন মাওলানা আবু রায়হান। তিনি পরিচয় উল্লেখ করে বারবার বললেও তার ওপর আক্রোশের সহিত পিটানো হয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর পান্থপথে এই ইমামের উপর পুলিশের নির্বিচার লাঠিপেটার শিকার হয়।

পুলিশ কে তিনি পরিচয় দিয়ে বলেন ‘আমি মসজিদের ইমাম, নামাজ পড়াতে যাচ্ছি’ বারবার বলা সত্ত্বেও পুলিশ তার ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

কী ঘটেছিল সেই সময়? দুপুর ১টার দিকে কলাবাগান থেকে পান্থপথ মসজিদে জোহরের নামাজ পড়াতে যাচ্ছিলেন ইমাম আবু রায়হান। পথিমধ্যে পুলিশ ধাওয়া দিলে তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে রাস্তার পাশে সরে দাঁড়ান। কিন্তু অভিযোগ, আন্দোলনকারীরা সরে যাওয়ার পরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য সরাসরি তার ওপর হামলে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ কোনো উস্কানি ছাড়াই লাঠিশোটা নিয়ে তার দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং কয়েকটি আঘাত করে তাকে ফেলে দেয়। তিনি উঠে দাঁড়িয়ে কিছু দূর যাওয়ার পরও ইমামকে বলতে শোনা যায়—‘আমি ইমাম, নামাজ পড়াতে যাচ্ছি; আমার গায়ে পুলিশ শুধু-শুধুই হাত মারছে!’

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ইমাম মাওলানা আবু রায়হান জানান, ‘আমি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। অন্য কাউকে পুলিশ কিছু বলেনি। কিন্তু হঠাৎ কয়েকজন শুধু আমার ওপরই হামলা শুরু করল। আরও কয়েকজন পুলিশ এসে বলল, ‘হুজুর তো, বেশি করে পিডা।’ তখন সাধারণ মানুষ পাশে এসে বলছিল হুজুর তো কিছু করেননি, তাকে কেন মারছেন?”

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে পুলিশের আচরণ দেখে বুঝেছি, তাদের শত্রুতা আমাদের লেবাসের সঙ্গে। সাধারণ মানুষের তুলনায় মাদরাসা ছাত্রদেরকেই বেশি টার্গেট করেছে। আমার সামনে ৭–৮ জন ছাত্রকে মারতে দেখেছি।’

সামাজিক মাধ্যমে তীব্র নিন্দা, ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক মাধ্যমে পুলিশি আচরণের সমালোচনা শুরু হয়। তার সাবেক সহপাঠী ইসরাফীল হুসাইন লিখেন ‘তীব্র নিন্দা! মুফতি আবু রায়হান মসজিদে নামাজ পড়াতে যাচ্ছিলেন বলেও আওয়ামী পুলিশের লাঠি থেকে রেহাই পেল না।’

ইসলামী ছাত্র মজলিসের সাবেক সভাপতি মোল্লা খালিদ সাইফুল্লাহ পোস্ট করেন ‘আমি ইমাম, নামাজ পড়াতে এসেছিলাম তবুও ধানমন্ডি ৩২-এ আমাদের ভাইয়ের ওপর আক্রমণ!’

ইমাম মাওলানা আবু রায়হান
ইমামের শারীরিক অবস্থা এখন কেমন?

ইমাম আবু রায়হান বলেন, ‘আঘাত পেয়েও আমি জোহর, আসর, মাগরিব ও এশার নামাজ পড়িয়েছি। এখন শরীরে জ্বর জ্বর লাগছে। বাম পা দুই জায়গা ছুলে গেছে।’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি তো সাধারণ মানুষ, আন্দোলনের সাথে নেই। কিন্তু পুলিশের আচরণ দেখে মনে হয়েছে, তারা আলেমদের লেবাস দেখেই মারছে।’

ঘটনাটি সারা দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে এবং পুলিশি বেপরোয়া আচরণ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে সাধারণ মানুষ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 06:06:45 pm, Monday, 17 November 2025
97 Time View

নামাজ পড়াতে যাওয়ার পথে পুলিশের আক্রমণের শিকার হলেন মসজিদের ইমাম: মাওলানা আবু রায়হান

Update Time : 06:06:45 pm, Monday, 17 November 2025

 

ডেস্ক রিপোর্ট:
রাজধানীর পান্থপথে মসজিদের ইমাম নামাজ পড়াতে যাওয়ার পথে পুলিশের অমানবিক আক্রমণের শিকার হন মাওলানা আবু রায়হান। তিনি পরিচয় উল্লেখ করে বারবার বললেও তার ওপর আক্রোশের সহিত পিটানো হয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর পান্থপথে এই ইমামের উপর পুলিশের নির্বিচার লাঠিপেটার শিকার হয়।

পুলিশ কে তিনি পরিচয় দিয়ে বলেন ‘আমি মসজিদের ইমাম, নামাজ পড়াতে যাচ্ছি’ বারবার বলা সত্ত্বেও পুলিশ তার ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

কী ঘটেছিল সেই সময়? দুপুর ১টার দিকে কলাবাগান থেকে পান্থপথ মসজিদে জোহরের নামাজ পড়াতে যাচ্ছিলেন ইমাম আবু রায়হান। পথিমধ্যে পুলিশ ধাওয়া দিলে তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে রাস্তার পাশে সরে দাঁড়ান। কিন্তু অভিযোগ, আন্দোলনকারীরা সরে যাওয়ার পরও কয়েকজন পুলিশ সদস্য সরাসরি তার ওপর হামলে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ কোনো উস্কানি ছাড়াই লাঠিশোটা নিয়ে তার দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং কয়েকটি আঘাত করে তাকে ফেলে দেয়। তিনি উঠে দাঁড়িয়ে কিছু দূর যাওয়ার পরও ইমামকে বলতে শোনা যায়—‘আমি ইমাম, নামাজ পড়াতে যাচ্ছি; আমার গায়ে পুলিশ শুধু-শুধুই হাত মারছে!’

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ইমাম মাওলানা আবু রায়হান জানান, ‘আমি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। অন্য কাউকে পুলিশ কিছু বলেনি। কিন্তু হঠাৎ কয়েকজন শুধু আমার ওপরই হামলা শুরু করল। আরও কয়েকজন পুলিশ এসে বলল, ‘হুজুর তো, বেশি করে পিডা।’ তখন সাধারণ মানুষ পাশে এসে বলছিল হুজুর তো কিছু করেননি, তাকে কেন মারছেন?”

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে পুলিশের আচরণ দেখে বুঝেছি, তাদের শত্রুতা আমাদের লেবাসের সঙ্গে। সাধারণ মানুষের তুলনায় মাদরাসা ছাত্রদেরকেই বেশি টার্গেট করেছে। আমার সামনে ৭–৮ জন ছাত্রকে মারতে দেখেছি।’

সামাজিক মাধ্যমে তীব্র নিন্দা, ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক মাধ্যমে পুলিশি আচরণের সমালোচনা শুরু হয়। তার সাবেক সহপাঠী ইসরাফীল হুসাইন লিখেন ‘তীব্র নিন্দা! মুফতি আবু রায়হান মসজিদে নামাজ পড়াতে যাচ্ছিলেন বলেও আওয়ামী পুলিশের লাঠি থেকে রেহাই পেল না।’

ইসলামী ছাত্র মজলিসের সাবেক সভাপতি মোল্লা খালিদ সাইফুল্লাহ পোস্ট করেন ‘আমি ইমাম, নামাজ পড়াতে এসেছিলাম তবুও ধানমন্ডি ৩২-এ আমাদের ভাইয়ের ওপর আক্রমণ!’

ইমাম মাওলানা আবু রায়হান
ইমামের শারীরিক অবস্থা এখন কেমন?

ইমাম আবু রায়হান বলেন, ‘আঘাত পেয়েও আমি জোহর, আসর, মাগরিব ও এশার নামাজ পড়িয়েছি। এখন শরীরে জ্বর জ্বর লাগছে। বাম পা দুই জায়গা ছুলে গেছে।’ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি তো সাধারণ মানুষ, আন্দোলনের সাথে নেই। কিন্তু পুলিশের আচরণ দেখে মনে হয়েছে, তারা আলেমদের লেবাস দেখেই মারছে।’

ঘটনাটি সারা দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে এবং পুলিশি বেপরোয়া আচরণ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে সাধারণ মানুষ।