4:52 am, Saturday, 22 November 2025

জামায়াতের ফেতনা কাদিয়ানির চেয়েও ভয়াবহ: হেফাজত আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

B6e9f607300145a6a72bd1d80e9a11e6 690e023693406

 

ডেস্ক রিপোর্ট:
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমি ও জামিয়া বাবুনগর মাদ্রাসার প্রধান পরিচালক আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী জামায়াতে ইসলামীকে ‘ঈমানের বড় ডাকাত’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর ফেতনা কাদিয়ানির ফেতনার চেয়েও ভয়াবহ। কাদিয়ানিরা ঈমানের যত ক্ষতি করতে পারেনি, জামায়াতে ইসলামী তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ফটিকছড়ির ঐতিহ্যবাহী আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদরাসার ১০৩তম বার্ষিক মাহফিলের সমাপনী দিনে তিনি এ বক্তব্য দেন।

বাবুনগরী বলেন, ঈমান-আকিদা রক্ষায় বাংলাদেশ থেকে জামায়াতে ইসলামকে নির্মূলের চেষ্টা করতে হবে। বাংলাদেশে এত বড় জাহেল থাকতে পারে না, যারা হজরত ওমর (রা.) সহ সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে কটূক্তি করে।

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী নাম দিয়েছে ইসলামি সংগঠন হিসেবে, কিন্তু তারা ঈমানের বড় ডাকাত। আমাদের আকাবিররাও বলেছেন জামায়াতে ইসলামের ইসলাম আর আমাদের ইসলাম এক নয়। আমাদের ইসলাম হচ্ছে মদিনার ইসলাম, আর তাদের ইসলাম মওদুদীবাদীর ইসলাম। যদি ঈমানকে হেফাজত করতে চাও, তাহলে জামায়াতে ইসলাম থেকে দূরে থাকো। যারা জামায়াতে ইসলামীতে আছে, তাদের ঈমান আছে কি না-তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

মাহফিলের মঞ্চে বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিশ বাংলাদেশের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশে স্কুল, কলেজ, কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসা থেকে এক যোগে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাগরণ শুরু হয়েছে। এ জাগরণকে কেউ রুখতে পারবে না।

তিনি বলেন, আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর কাছে এই জাতি হাজার বছর ঋণী হয়ে থাকবে। তিনি আল্লাহু আকবারের পতাকা উঁচিয়ে আমৃত্যু সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সব বাধা ও রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ইসলাম ও দ্বীনের খেদমতে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। যা ইতিহাসে এক সাহসী পদক্ষেপ।

অন্যদিকে, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও ইসলামি বক্তা শায়খ আহমদুল্লাহ বলেন, আজকের তরুণ সমাজের এক বিশাল অংশ ইসলামের ছায়াতলে ফিরে আসছে কিংবা আসার অপেক্ষায় আছে। কিন্তু পশ্চিমা সভ্যতার অপশক্তি নানা ছলে তাদের ঈমান কেড়ে নিচ্ছে। শিক্ষার নামে, উন্নয়নের নামে, আধুনিকতার নামে মুসলমানদের আল্লাহর রাস্তা থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন আল্লাহ আমাদের ওলামায়ে কেরামদের এমন যোগ্যতা, নিষ্ঠা ও সাহস দান করেন-যাতে তাঁরা সমাজকে কোরআন-সুন্নাহর আলোকে পরিবর্তন করতে পারেন। এই ভূমিকে আল্লাহ তাআলা ঈমান, কোরআন ও সুন্নাহর জন্য কবুল করুন।

বক্তারা বলেন, বাবুনগর মাদরাসা কোনো সাধারণ প্রতিষ্ঠান নয়; এটি এক বিশাল জ্ঞানের স্মৃতিস্তম্ভ। এখান থেকে যুগে যুগে ঈমান ও আমলের বাণী ছড়িয়ে পড়ছে, যা বাংলাদেশের ইসলামি চিন্তা-চেতনার প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সরোয়ার আলমগীর, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, আলেম-ওলামা, সাংবাদিক ও হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লামা বাবুনগরীর বক্তব্যে সমস্বরে ‘আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দেন এবং ইসলাম বিরোধী সব ফেতনা প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার করেন।

মাহফিলের দ্বিতীয় ও সমাপনী দিনে বয়ান করেন আল্লামা সায়্যিদ মওদুদ মাদানি (দেওবন্দ, ভারত), আল্লামা আওরঙ্গজেব ফারুকী (করাচি, পাকিস্তান), মুফতি মাহমুদ হাসান (চট্টগ্রাম), মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি (ঢাকা), মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী (ঢাকা)।

মাহফিল শেষে দেশের কল্যাণ ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য বিশেষ দোয়া পরিচালনা করা হয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 07:33:32 pm, Friday, 7 November 2025
124 Time View

জামায়াতের ফেতনা কাদিয়ানির চেয়েও ভয়াবহ: হেফাজত আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী

Update Time : 07:33:32 pm, Friday, 7 November 2025

 

ডেস্ক রিপোর্ট:
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমি ও জামিয়া বাবুনগর মাদ্রাসার প্রধান পরিচালক আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী জামায়াতে ইসলামীকে ‘ঈমানের বড় ডাকাত’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর ফেতনা কাদিয়ানির ফেতনার চেয়েও ভয়াবহ। কাদিয়ানিরা ঈমানের যত ক্ষতি করতে পারেনি, জামায়াতে ইসলামী তার চেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ফটিকছড়ির ঐতিহ্যবাহী আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদরাসার ১০৩তম বার্ষিক মাহফিলের সমাপনী দিনে তিনি এ বক্তব্য দেন।

বাবুনগরী বলেন, ঈমান-আকিদা রক্ষায় বাংলাদেশ থেকে জামায়াতে ইসলামকে নির্মূলের চেষ্টা করতে হবে। বাংলাদেশে এত বড় জাহেল থাকতে পারে না, যারা হজরত ওমর (রা.) সহ সাহাবায়ে কেরামদের নিয়ে কটূক্তি করে।

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী নাম দিয়েছে ইসলামি সংগঠন হিসেবে, কিন্তু তারা ঈমানের বড় ডাকাত। আমাদের আকাবিররাও বলেছেন জামায়াতে ইসলামের ইসলাম আর আমাদের ইসলাম এক নয়। আমাদের ইসলাম হচ্ছে মদিনার ইসলাম, আর তাদের ইসলাম মওদুদীবাদীর ইসলাম। যদি ঈমানকে হেফাজত করতে চাও, তাহলে জামায়াতে ইসলাম থেকে দূরে থাকো। যারা জামায়াতে ইসলামীতে আছে, তাদের ঈমান আছে কি না-তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

মাহফিলের মঞ্চে বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিশ বাংলাদেশের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশে স্কুল, কলেজ, কওমি ও আলিয়া মাদ্রাসা থেকে এক যোগে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাগরণ শুরু হয়েছে। এ জাগরণকে কেউ রুখতে পারবে না।

তিনি বলেন, আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর কাছে এই জাতি হাজার বছর ঋণী হয়ে থাকবে। তিনি আল্লাহু আকবারের পতাকা উঁচিয়ে আমৃত্যু সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। সব বাধা ও রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ইসলাম ও দ্বীনের খেদমতে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। যা ইতিহাসে এক সাহসী পদক্ষেপ।

অন্যদিকে, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও ইসলামি বক্তা শায়খ আহমদুল্লাহ বলেন, আজকের তরুণ সমাজের এক বিশাল অংশ ইসলামের ছায়াতলে ফিরে আসছে কিংবা আসার অপেক্ষায় আছে। কিন্তু পশ্চিমা সভ্যতার অপশক্তি নানা ছলে তাদের ঈমান কেড়ে নিচ্ছে। শিক্ষার নামে, উন্নয়নের নামে, আধুনিকতার নামে মুসলমানদের আল্লাহর রাস্তা থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন আল্লাহ আমাদের ওলামায়ে কেরামদের এমন যোগ্যতা, নিষ্ঠা ও সাহস দান করেন-যাতে তাঁরা সমাজকে কোরআন-সুন্নাহর আলোকে পরিবর্তন করতে পারেন। এই ভূমিকে আল্লাহ তাআলা ঈমান, কোরআন ও সুন্নাহর জন্য কবুল করুন।

বক্তারা বলেন, বাবুনগর মাদরাসা কোনো সাধারণ প্রতিষ্ঠান নয়; এটি এক বিশাল জ্ঞানের স্মৃতিস্তম্ভ। এখান থেকে যুগে যুগে ঈমান ও আমলের বাণী ছড়িয়ে পড়ছে, যা বাংলাদেশের ইসলামি চিন্তা-চেতনার প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছে।

মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সরোয়ার আলমগীর, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, আলেম-ওলামা, সাংবাদিক ও হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। উপস্থিত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লামা বাবুনগরীর বক্তব্যে সমস্বরে ‘আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দেন এবং ইসলাম বিরোধী সব ফেতনা প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকার করেন।

মাহফিলের দ্বিতীয় ও সমাপনী দিনে বয়ান করেন আল্লামা সায়্যিদ মওদুদ মাদানি (দেওবন্দ, ভারত), আল্লামা আওরঙ্গজেব ফারুকী (করাচি, পাকিস্তান), মুফতি মাহমুদ হাসান (চট্টগ্রাম), মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি (ঢাকা), মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী (ঢাকা)।

মাহফিল শেষে দেশের কল্যাণ ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য বিশেষ দোয়া পরিচালনা করা হয়।