সংবাদ প্রকাশের জেরে প্রবাসী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে জিডি, প্রতিবাদে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার;
সংবাদ প্রকাশের জেরে যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক নুরুল হক শিপুর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রোববার ২৬ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ পেশাদার সাংবাদিক ফোরামের (বিপিজেএফ) ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক উপাধ্যক্ষ নুরুজ্জামান হীরা, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক সমিতির সভাপতি নাসিমা আক্তার সোমা, পিবজার সহ-সভাপতি ড. দিপু সিদ্দিকী, বিপিজেএফের সাধারণ সম্পাদক রোমান আকন্দ, সহ-সভাপতি এফ রহমান রূপক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম রেজাউল করিম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক হাফিজ উদ্দিন, মানবাধিকার সম্পাদক জাকিয়া হোসেন, সহ-ধর্ম সম্পাদক এসএম জাহান ইমাম, সাংবাদিক রোজিনা আক্তার, মোস্তফা সরদার প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকেরা যদি নিশ্চুপ থাকেন, সমাজ অন্ধকারে ঢেকে যাবে। প্রকৃত সাংবাদিকদের কোনো দল বা প্রতিষ্ঠানের কাছে দায়বদ্ধ নয়, তারা কেবল জনগণের পক্ষেই কাজ করেন। যুক্তরাজ্যে নিবন্ধিত অনলাইন টেলিভিশন ‘রানার টিভি’র রিপোর্টার নুরুল হক শিপু দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে সাংবাদিকতা করে আসছেন। সঠিক তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে একটি ভূমি আত্মসাৎ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রচারের পর তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জিডি দায়ের করা হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, সাংবাদিক নুরুল হক শিপু তার পেশাগত দায়িত্বের অংশ হিসেবেই সংবাদ প্রচার করেছেন। এজন্য তাকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, যা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। অবিলম্বে ওই জিডি প্রত্যাহারের দাবি জানান এবং সাংবাদিক শিপুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
ঘটনা বিবরণে জানা যায়, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত এম এ হকের ছেলে ও বর্তমান সহ-সভাপতি রিয়াসাদ আজিম আদনানের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ব্রিটিশ বাংলাদেশির জমি আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে।
এ অভিযোগে ভিত্তি করে রানার টিভি প্রবাসী সাংবাদিক নুরুল হক শিপু পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ ও সাক্ষাৎকারসহ একটি প্রতিবেদন প্রচার করেন। প্রতিবেদনে অভিযুক্ত আদনানের প্রতিক্রিয়াও যুক্ত করা হয়। এরপর ক্ষুব্ধ হয়ে রিয়াসাদ আজিম আদনান সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। সেখানে প্রয়াত দুদু মিয়ার ছেলে নাসিম কবির, হুমায়ুন কবির, এবং প্রতিবেদক নুরুল হক শিপু তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়, তারা ভুয়া তথ্য দিয়ে আদনানের মানহানি করেছেন। অন্যদিকে হুমায়ুন কবির অভিযোগ করেছেন, প্রয়াত এম এ হক তার পিতা ব্রিটিশ বাংলাদেশি প্রয়াত দুদু মিয়ার কাছে ৬০ শতক জমি বিক্রি করেছিলেন, যার দলিলও সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে জীবিত অবস্থায় এম এ হক ৩০ শতক জায়গা বুঝিয়ে দিলেও বাকিটুকু বুঝিয়ে দেওয়ার আগেই উভয়েই মারা যান। ২০২৪ সালে হুমায়ুন কবির দেশে এসে জায়গা বুঝে নিতে চাইলে রিয়াসাদ আজিম আদনান তা অস্বীকার করেন এবং তাকে প্রকাশ্যে হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন। পরে হুমায়ুন জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করে যুক্তরাজ্যে ফিরে যান। এরপর ওই জমির প্রবেশপথ বন্ধ করে সেখানে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই ঘটনায় হুমায়ুনের মা রাহেলা আক্তার চৌধুরী বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। সেই অভিযোগের তথ্য-উপাত্ত ও সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রতিবেদনই সম্প্রতি রানার টিভিতে প্রকাশ করেন সাংবাদিক নুরুল হক শিপু। এরপরই তার বিরুদ্ধে জিডি হয়।






















