জেলা প্রতিনিধি:
প্রবাসী নিঃসঙ্গতা সময় কাটাতে জড়িয়ে পড়েন ‘বিগো লাইভ’ অ্যাপের এক নারীর প্রতারণার জালে। অনলাইন পরিচয় থেকে প্রথমে প্রেম, অতঃপর ভিডিও কলে বিয়ে। প্রেমিকার কথায় বিদেশ থেকে তার নামেই কিনলেন জমি, বানালেন বাড়ি ও গরুর খামার, গড়ে উঠল জীবনের স্বপ্ন। কিন্তু সেই স্বপ্নই যখন সত্যি হতে চলেছে, তখনই জানতে পারলেন মর্মস্পর্শী এক অস্বাভাবিক ঘটনা। তার প্রেমিকা ও ভিডিও কলে বিয়ে করা স্ত্রী আসলে অন্য একজনের বিবাহিত বউ।
এই ঘটনা জানার পরই সম্পর্কে ফাটল ধরে! বিষয়টি মীমাংসার জন্য দীর্ঘ একুশ বছর পর সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে প্রবাসী শাফিউল হক।
অনলাইন প্রেমিকা ‘সুরাইয়া আক্তার মৌ’ এর সঙ্গে দেখা করতে যান প্রবাসী শাফিউল। কিন্তু সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছিল এক মৃত্যুর ফাঁদ। অনলাইন প্রেমিকা সুরাইয়া শরবতের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে পান করান, অতঃপর অচেতন হয়ে পড়েন শাফিউল। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়ায়! ভুক্তভোগী প্রবাসী শাফিউল হকের করা মামলায় গত ১৮ অক্টোবর, শনিবার পুলিশ অনলাইন প্রেমিকা সুরাইয়া আক্তার মৌ, তার স্বামী দিপু রানা এবং ছোট ভাই নয়নকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ‘বিগো লাইভ’ অ্যাপের মাধ্যমে শাফিউল হকের সঙ্গে সুরাইয়া আক্তার মৌয়ের পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। একপর্যায়ে ভিডিও কলে বিয়ে করেন তারা। প্রবাসে থাকাকালীন সুরাইয়ার পরামর্শে শাফিউল তার নামে ছয় শতাংশ জমি কেনেন। সেখানে একটি ঘর ও গরুর খামার নির্মাণ করেন অভিযোগ রয়েছে, বিদেশ থেকে সুরাইয়ার কাছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা পাঠান শাফিউল।
গত বছর তিনি জানতে পারেন, সুরাইয়া আক্তার বিবাহিত এবং তার স্বামীর নাম দিপু রানা। এরপর থেকেই তাদের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। গত ১০ আগস্ট দেশে ফিরে শাফিউল বিষয়টি মীমাংসার জন্য দেখা করতে গেলে সুরাইয়া তাকে বাড়িতে ডেকে নেন। সেখানে সুরাইয়া, তার স্বামী দিপু রানা এবং ভাই নয়ন উপস্থিত ছিলেন।
একপর্যায়ে সুরাইয়া তাকে শরবত পান করান। শরবত পানের কিছুক্ষণের মধ্যেই অচেতন হয়ে পড়েন শাফিউল। পরে স্থানীয়রা উপজেলার মানিকগঞ্জ বাজার এলাকার একটি মুরগির খামারের পাশে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। জ্ঞান ফিরে তিনি জানতে পারেন, শরবতে বিষ মিশিয়ে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল।
সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাদশা আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পর তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের পরবর্তী ধাপে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যোগাযোগ: সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: রাসেল সরকার, অফিস: ৩৯/৩, মানিক নগর, পুকুর পাড়, মুগদা, ঢাকা - ১২০৩, ফোন: +৮৮০১৭২৬৯১৫৫২৪, +৮৮০১৯৭৬৯১৫৫২৪, ইমেইল: Sheikhmdraselbd@gmail.com, www.dailydigantapratidin.com
2025 © All rights reserved © দৈনিক দিগন্ত প্রতিদিন