কুমিল্লা জাতীয় অন্ধকল্যান সমিতির দুর্নীতির তদন্ত রিপোর্টের সত্যতা ১৯ লক্ষ টাকায় ধামাচাপা

বিশেষ প্রতিনিধি:
অবশেষে কুমিল্লা অন্ধকল্যান সমিতির ১৭ কোটি ২২ লাখ ৯৫ হাজার টাকার দুর্নীতির তদন্ত রিপোর্ট ১৯ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে পরিবর্তনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ২৪/০৫/২০২৫ইং তারিখে কুমিল্লার অন্ধকল্যান চক্ষু হাসপাতাল তথা বাংলাদেশ জাতীয় অন্ধকল্যান সমিতি কুমিল্লার ১৭ কোটি ২২ লাখ ৯৫ হাজার টাকার দুর্নীতির বিষয়ে কুমিল্লা সমাজসেবা অধিদপ্তরে একটি অভিযোগ দায়ের করা হলে উক্ত অভিযোগটি ধামাচাপা হচ্ছে মর্মে ঘুষ লেনদেরনের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন হিমাগারে বলে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল। অবশেষে ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ সহ একটি অডিও রেকর্ড ও সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে প্রতিবেদকের হাতে।
জনৈক ভুক্তভোগী বাংলাদেশ জাতীয় অন্ধকল্যান সমিতির পরিচালনা কমিটির বিরোদ্ধে ফ্যাসিবাদ, জুলাই বিপ্লবে ছাত্র জনতার উপর কর্মচারীদের দিয়ে হামলা ও ১৭ কোটি ২২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা আত্মসাতের বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে গত ২৪ মে ২০২৫ইং কুমিল্লা সমাজসেবা অধিদপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে ১৪ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিকে আদেশ প্রদান করে সমাজসেবার উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী। পরে ঐ তদন্ত রিপোর্ট তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রদানের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দেওয়া হয় কুমিল্লা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফারহানা আমিনকে প্রধান করে এবং সদর উপজেলার সমাজসেবা অফিসার মোঃ আবু তাহের ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সমাজসেবা অফিসার সাহিদুর রহমানকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হলেও তদন্ত শুরু করেন ১ মাস পর ২৬ জুন ২০২৫ইং তারিখ থেকে। ১৪ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হলেও সেই তদন্ত প্রতিবেদনের কার্যক্রম শুরু করেন এক মাস পর। ভাবা যায় উর্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশ ও সরকারি আদেশকে কি ভাবে অবহেলা করেছেন এই কর্মকর্তারা তাও আবার ঘুষ বানিজ্যও করে! এই তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করতে আরো তিন মাসেরও বেশি সময় লাগে তাদের। তদন্ত রিপোর্ট প্রদানে অযথায় কাল ক্ষেপনের কারনে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সাংবাদিক টিম অনুসন্ধানে নামে এবং তারা সংবাদ প্রচার করে যে টাকার বিনিময়ে জাতীয় অন্ধকল্যান সমিতির তদন্ত রিপোর্ট হিমাগারে।
উক্ত তদন্ত প্রতিবেদন চুড়ান্ত করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং তারিখে প্রতিবেদনটি দাখিল করলে তদন্ত প্রতিবেদনে মাত্র দু”জন স্টাফকে দোষী সাব্যস্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এছাড়া বাকী সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহী বলেও তদন্ত প্রতিবেদনে উল্ল্যেখ করা হয়। শুধু তাই নয় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার প্রতিবেদনকেও মিথ্যা বলে দাবি করেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো তাদের ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদও মিথ্যা বলে দাবি করে, যদিও এসকল প্রকাশিত সংবাদ গুলোর একটিরও প্রতিবাদ করে নি অভিযুক্তরা। তদন্ত প্রতিবেদক হলেন বিচারকের শামিল কেননা তদন্তের উপরেই ভিত্তি করে বিচার হয়, সেই বিচারক যখন আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে সত্য গোপন করে এবং স্ব-ইচ্ছায় ন্যায় আর সত্যতাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়, তখন কিইবা করার থাকে ভুক্তভোগীদের? ঠিক তাই করেছেন জাতীয় অন্ধকল্যান সমিতির তদন্ত প্রতিবেদনটির ক্ষেত্রে।
ইতিমধ্যে সাংবাদিকদের কাছে যে সকল তথ্য এসে পৌঁছেছে তাতে দেখা যায় কুমিল্লা অন্ধকল্যান সমিতির এইচ আর(এডমিন) সাইদুল ইসলাম এবং প্রজেক্ট ম্যানাজার সাজ্জাদ হোসেন তন্ময় কমিটির সভাপতি আ.ফ.ম তাইফুর আলমের পরামর্শে গত ০৮ আগস্ট ২০২৫ ইং তারিখে ১৯ লাখ টাকা ঘুষ দেয় কুমিল্লা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সাবেক উপ-পরিচালক ও ফ্যাসিস্ট এমপি আ.ক.ম বাহাউদ্দীন বাহারের ডান হাত খ্যাত, নড়াইলের বর্তমান সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দুর্ধর্ষ জেড এম মিজানুর রহমান খাঁনকে দিয়ে এই টাকার লেনদেন করা হয়। সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রধান কার্য্যলয়ের উপ-পরিচালক(নিবন্ধন -১) মো: নাসির উদ্দীন এর মহাখালীস্থ নিজ বাসায় এই ১৯ লাখ টাকার ৯ লাখ নেন জেড এম মিজানুর রহমান ১ লাখ নেন মো: নাসির উদ্দীন। বাকী নয় লাখ টাকা কুমিল্লার তদন্ত কমিটির সদস্যদের দেওয়া হয়।
আরো জানা যায় জেড এম মিজানুর রহমান হেড অফিসে বদলির তদবীরের জন্য এই টাকা কাজে লাগাবে এবং কুমিল্লার তদন্ত কমিটির সদস্য আবু তাহের তার ভাগের টাকা পেয়ে নিজ স্ত্রীকে নিয়ে ভারতের বোম্বাই সফরে গেছেন গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ইং তারিখ।
এই বিষয়ে কুমিল্লা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নূরুল ইসলাম পাটোয়ারীর সাথে মুঠো ফোনে কথা বললে তাকে তদন্ত প্রতিবেদন শুরুতেই ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান যে উক্ত ঘুষ লেনদেনের সাথে আমি জড়িত নই আমার অন্য কর্মকর্তার জড়িত থাকতে পারেন বলে দাবি করেন। বিভিন্ন কল রেকর্ড ও ভিডিও ফুটেজে উপ-পরিচালক মোঃ নূরুল ইসলাম সহ জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তদন্ত কমিটির সদস্য, কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সমাজসেবা অফিসার মো: সাহিদুর রহমানকে এই বিষয়ে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলে, সব কিছু তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও কুমিল্লা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফারহানা আমিন জানেন। ফারহানা আমিনকে বহুবার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অপর সদস্য কুমিল্লা সদর উপজেলার সমাজসেবা অফিসার মোঃ আবু তাহের ইতমধ্যে ভারতে, গোপন সূত্রে জানা যায় স্বৈরাচার সরকারের সাবেক এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার সহ ওবায়েদুল কাদেরের সাথে দেখা করেছেন বলেও জানা যায়। নিষিদ্ধ দল আওয়ামিলীগ নেতাদেরকে অর্থনৈতিক ভাবে সাপোর্ট দিয়ে সচল করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন বলেও একটি বিশ্বস্ত সূত্র বলছেন।
																			
																		
								                                        

















