3:56 am, Monday, 6 October 2025

সাংবাদিকতার আড়ালে গড়ে উঠেছে এক বিশাল প্রতারণার ভয়ংকর সিন্ডিকেট

picsart 25 10 01 04 30 45 287

 

বিশেষ প্রতিনিধি:
রাজধানীতে সাংবাদিকতার আড়ালে গড়ে উঠেছে এক বিশাল ভয়ংকর চক্র। তাদের টার্গেট সমাজের নামিদামি ও অর্থশালী ব্যক্তিদের। নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা। বেশ কিছু দিন ধরে দেশের নামিদামি ও নামসর্বস্ব বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম ব্যবহার করে রাজধানীর পল্টন, উত্তরা, রামপুরা, গুলশান, বনানী, গাবতলী, গুলিস্তান, শাহজাদপুর, যাত্রাবাড়ী, ভাটারা এলাকায় এই চক্রটি তাদের অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

সম্প্রতি তিনি একটি পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এবং একটি সাংবাদিক সংগঠনের নীতি নির্ধারক কমিটির মহাসচিব পরিচয়দানকারী নাম আবুল বাসার মজুমদার তার রয়েছে অপরাধ জগতের এক বিশাল সিন্ডিকেট। তিনি সাংবাদিকতার আড়ালে চালিয়ে যাচ্ছে চাঁদাবাজি নারী সাপ্লাই ও ব্ল‍্যাকমেইলিং ব্ল্যাকমেইল এর কার্যক্রম।

অনুসন্ধানে জানা যায়- ২০২২ সালে আবুল বাসার মজুমদার একটি আন্ডারগ্রাউন্ড সাপ্তাহিক অপরাধ দমন পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, অফিস ক্লিনার একটি নারী কে ধর্ষণ করা অভিযোগ সহ তার বিভিন্ন অপকর্ম চাঁদাবাজি ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডের কারণে ওই পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশক সেলিম খান তাকে বহিষ্কার করেন। এ ব্যাপারে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিউজ হয় এবং তিনি ধর্ষণের মামলায় দুই সপ্তাহ জেল-হাজত খাটেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এই প্রতারক জেল থেকে জামিনে বের হয়ে কিছুদিন যেতে না যেতেই বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও স্পা সেন্টারে নারী সাপ্লাই এবং চাঁদাবাজি করে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকার মালিক, যার নুন আনতে পান্তা ফুরায়তো, নেই আয়ের উৎস কিভাবে এত স্বল্প সময়ে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যায় এই আবুল বাসার।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ফ্যাসিস্ট সরকার আমলে স্বৈরাচার হাসিনার গধিরক্ষায় সক্রিয়ভাবে দালালি করলেও ৫ আগস্টের পর তিনি বাংলাদেশ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বা প্রেস কার্ড বাগিয়ে নেন। নিজেকে পরিচয় দেন মূল দ্বারা সাংবাদিক অথচ দুই লাইন সংবাদ লেখার ক্ষমতা তার নেই। এই নিয়ে একটি সাংবাদিক সংগঠন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে।। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি, এসব আওয়ামী লীগের দোসরদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিশেষ সূত্রে জানা যায়, এক মহিলার কাছ থেকে একটি পত্রিকার প্রতিনিধি করিয়ে দেওয়ার নামে নিয়েছিল ১০ হাজার টাকা এই প্রতারক আবুল বাসার মজুমদার কিন্তু সেই মহিলার প্রেস আইডি কার্ড না দিয়ে সম্পন্ন টাকা মেরেদেন ও-ই নারীর দোষ একটাই তার অপকর্মের সঙ্গী না হওয়া। তার মূল ব্যবসা বিভিন্ন নারীদের কে প্রেস আইডি কার্ড বানিয়ে দিয়ে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অপকর্ম করার জন্য পাঠিয়ে অর্থ আদায় করা। কিন্তু মজার বিষয় সে কি করে হঠাৎ হয়ে যায়- লক্ষ্য টাকার মালিক? তার নেই কোন উচ্চশিক্ষা নেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ও সাংবাদিক সংগঠনের সিনিয়র নেতা ও বাংলাদেশ সচিবালয় এর অ্যাক্রিডিটেশন (পিআইডি) আইডি কার্ড ব্যবহার করে লোকো সমাজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এই আওয়ামী লীগের দোসর আবুল বাসার মজুমদার। সাংবাদিকতার ফাঁদ তৈরি করে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েদের সাংবাদিকতার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে করে যাচ্ছে আইডি কার্ড বাণিজ্য। তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা। তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ উঠেছে পত্রিকার আইডি কার্ড দেওয়ার কথ্য বলে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার নারী ও পুরুষের কাছ থেকে ১০ থেকে বিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার অফিস সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে এক ব্যক্তির কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে বেশ কিছু টাকা, এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন এই প্রতারক আবুল বাসার মজুমদারের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর তার পিতার নাম শহীদউল্লাহ মজুমদার, গ্রাম: লাউকরা ডাকঘর: হাটিলাটঙ্গীরপার উপজেলা: হাজীগঞ্জ। এসব টাকা দিয়ে জমি রেখে চাষাবাদ ও বাড়ি করেন।

ভুক্তভোগীরা এই প্রতারক আবুল বাসার মজুমদার কে টাকার জন্য চাপ দিলে সে সবাইকে মামলা হামলা ও ডিবি পুলিশের ভয় দেখিয়ে এড়িয়ে যায়। তার এসব প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেও কোন প্রতিকার পাননি বলে জানা যায়। তথ্যসূত্রে জানা যায় সম্প্রতি সময় আবারো ব্ল‍্যাকমেইলিং এর মতো গুরুতর কাজে জড়িয়ে পড়ে এই প্রতারক আবুল বাসার মজুমদার। বিভিন্ন মিডিয়ার বাটপারি সাইনবোর্ড লাগিয়ে প্রতিনিধি বিজ্ঞাপন দিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পেটে বোমা মারলেও দু’লাইন লেখার যোগ্যতা নেই, অথচ রিপোর্টার পরিচয়ে তারাই খুলে বসেছে বহুমুখী প্রতারণার বাণিজ্য। সংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে ভুয়া সাংবাদিকদের তৎপরতা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। যত্রতত্র ফেসবুক লাইভ, নামসর্বস্ব পত্রিকা ও অনলাইনের প্রেস লেখা স্টিকার ও আইডি কার্ড ঝুলিয়ে অবাধে চলাচল করছে সাংবাদিক নামধারী ভুয়া ব্যক্তিরা।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা শহরে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। নামসর্বস্ব পত্রিকা ও অনিবন্ধিত ভুঁইফোঁড় নিউজ পোর্টালের নামে কিছু আসাধু লোক সাংবাদিক পরিচয়ে জনসাধারণের কাছ থেকে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। তারা যখন যেখানে ইচ্ছে হানা দিচ্ছে, সাধারণ মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ফাঁদে ফেলছে। এতে সাংবাদিকতার মতো একটি মহান পেশার মর্যাদা হুমকির মুখে পড়েছে। ভুয়া সাংবাদিকদের অপ্রতিরোধ্য দৌরাত্ম্যে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকেরা। পাশাপাশি বিরক্ত হচ্ছেন প্রশাসনের লোকজন। তবে এসব প্রতারকের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে প্রতারণার অভিযোগে দু-একজন গ্রেপ্তার হলেও জেল থেকে বের হয়ে ফের একই অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে তারা।

সাংবাদিকতার নামে প্রতারকদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার তাগিদ দিয়েছেন পেশাদার সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। পাশাপাশি গণমাধ্যম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণেরও তাগিদ দিয়েছেন তারা। তবে ভুয়া সাংবাদিক শনাক্তের পাশাপাশি অপসাংবাদিকতা রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর দেশের বিভিন্ন স্থানে অপরাধীরাও নিজেকে বাঁচাতে গলায় ভুঁইফোঁড় অনলাইন ও পত্রিকার কার্ড ঝুঁলিয়ে সাংবাদিক বনে গেছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চিহ্নিত মাদক কারবারি ও দেহব্যবসায়ীদের সহযোগী বানিয়ে প্রশাসনিক সহায়তা নিয়ে গড়ে উঠেছে ভুয়া সাংবাদিকদের ভয়ংকর সিন্ডিকেট। এরা প্রায়ই থানার দারোগাদের সঙ্গে গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডায় মত্ত থাকে। পুলিশের ‘সোর্স’ হিসেবে তারাই বিশ্বস্ত, ঘুষ বাণিজ্যে পুলিশের সহায়ক হিসেবে কাজ করে। থানায় আসা-যাওয়া ভুক্তভোগী মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে হেনস্তা করা, আসামি ধরানো-ছাড়ানো, বিচার-সালিশের মাধ্যমে যে কোনো অপরাধের মীমাংসা করিয়ে দেওয়ার মতো জঘন্য দালালিতে মেতে উঠেছে এসব প্রতারক। এ ছাড়া এই চক্রগুলো দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে দেশের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। মিথ্যা-বানোয়াট সংবাদ প্রচারের কথা বলে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে থাকে।

তারা আরও বলেন, ‘নৈতিক সাংবাদিকতার বিষয়টি অনেকটাই সাংবাদিকের ব্যক্তিচরিত্রের ওপর নির্ভর করে। অনেকেই যেমন নানা কারণে সাংবাদিকতার এথিকস উপেক্ষা করছেন, কেউ কেউ আবার অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সততার সঙ্গে সাংবাদিকতা করছেন। এ পেশায় সাংবাদিকতা বিষয় নিয়ে লেখাপড়া করা ছেলে-মেয়েদের সংখ্যা বাড়ছে; এতে গণমাধ্যমের সার্বিক চিত্র ভবিষ্যতে আরও ইতিবাচকভাবে বদলাবে। তাই আইন-শৃংখলা প্রতিপক্ষের উচিত এসব প্রতারকদের এখনই লাগাম ধরা।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে তার আসল রহস্য এই আয়ের উৎস কোথায়? আবুল বাসার মজুমদারের রয়েছে রাজধানীতে এক বিশাল অপরাধ জগতের সিন্ডিকেট ওই সিন্ডিকেট দ্বারা চলছে রমরমা সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে শিল্পপতিদের ব্ল্যাকমেল করার বাণিজ্যের অভিযোগ, যে সকল এলাকাগুলোতে প্রতারণা ফাঁদ তৈরি করে সুন্দরী মেয়ে দিয়ে, ওই সকল স্থানের নাম, উত্তরা, রামপুরা, গুলশান,নানী ,গাবতলী, গুলিস্তান, শাহজাদপুর, ভাটারা এলাকায় রয়েছে বিশাল এক নারী প্রতারণার ফাঁদ।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) জানিয়েছে, বেশ কিছু অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে হয়রানি ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ রয়েছে। বিষয়গুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন, একশ্রেণির নামসর্বস্ব পত্রিকার সম্পাদকেরা ভুয়া সাংবাদিকদের দিয়ে সিন্ডিকেট করে ব্ল্যাকমেইলিং করে থাকেন। তাদের কারণে পেশাদার সাংবাদিকদের সম্মানহানি হচ্ছে। এই চক্রগুলো প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর হতে হবে। পাশাপাশি এদের যেখানেই পাওয়া যাবে, ধরে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে।

ভুয়া সাংবাদিকদের বিষয়ে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. আব্দুস সবুর বলেন, এদের প্রতারণার কথা আমাদের কানেও আসে। নামধারি এসব সাংবাদিকের কারণে যাতে পেশাদার সাংবাদিকদের কোনো ক্ষতি বা বদনাম না হয়, সেই ব্যবস্থা করা হবে। এরই মধ্যে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় আমাদের কাজ শুরু করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি কর্মশালার ব্যবস্থা করা হবে। শিগগিরই ঢাকার সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ভুয়া ও অপসাংবাদিকতা রুখতে কিছু কাজ শুরু হয়েছে। শিগগিরই আরও বড় পরিসরে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে পারব: চলবে.!

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 10:32:06 pm, Tuesday, 30 September 2025
46 Time View

সাংবাদিকতার আড়ালে গড়ে উঠেছে এক বিশাল প্রতারণার ভয়ংকর সিন্ডিকেট

Update Time : 10:32:06 pm, Tuesday, 30 September 2025

 

বিশেষ প্রতিনিধি:
রাজধানীতে সাংবাদিকতার আড়ালে গড়ে উঠেছে এক বিশাল ভয়ংকর চক্র। তাদের টার্গেট সমাজের নামিদামি ও অর্থশালী ব্যক্তিদের। নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা। বেশ কিছু দিন ধরে দেশের নামিদামি ও নামসর্বস্ব বিভিন্ন গণমাধ্যমের নাম ব্যবহার করে রাজধানীর পল্টন, উত্তরা, রামপুরা, গুলশান, বনানী, গাবতলী, গুলিস্তান, শাহজাদপুর, যাত্রাবাড়ী, ভাটারা এলাকায় এই চক্রটি তাদের অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

সম্প্রতি তিনি একটি পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এবং একটি সাংবাদিক সংগঠনের নীতি নির্ধারক কমিটির মহাসচিব পরিচয়দানকারী নাম আবুল বাসার মজুমদার তার রয়েছে অপরাধ জগতের এক বিশাল সিন্ডিকেট। তিনি সাংবাদিকতার আড়ালে চালিয়ে যাচ্ছে চাঁদাবাজি নারী সাপ্লাই ও ব্ল‍্যাকমেইলিং ব্ল্যাকমেইল এর কার্যক্রম।

অনুসন্ধানে জানা যায়- ২০২২ সালে আবুল বাসার মজুমদার একটি আন্ডারগ্রাউন্ড সাপ্তাহিক অপরাধ দমন পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, অফিস ক্লিনার একটি নারী কে ধর্ষণ করা অভিযোগ সহ তার বিভিন্ন অপকর্ম চাঁদাবাজি ও অপরাধমূলক কর্মকান্ডের কারণে ওই পত্রিকার সম্পাদক প্রকাশক সেলিম খান তাকে বহিষ্কার করেন। এ ব্যাপারে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় নিউজ হয় এবং তিনি ধর্ষণের মামলায় দুই সপ্তাহ জেল-হাজত খাটেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এই প্রতারক জেল থেকে জামিনে বের হয়ে কিছুদিন যেতে না যেতেই বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও স্পা সেন্টারে নারী সাপ্লাই এবং চাঁদাবাজি করে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকার মালিক, যার নুন আনতে পান্তা ফুরায়তো, নেই আয়ের উৎস কিভাবে এত স্বল্প সময়ে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যায় এই আবুল বাসার।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ফ্যাসিস্ট সরকার আমলে স্বৈরাচার হাসিনার গধিরক্ষায় সক্রিয়ভাবে দালালি করলেও ৫ আগস্টের পর তিনি বাংলাদেশ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বা প্রেস কার্ড বাগিয়ে নেন। নিজেকে পরিচয় দেন মূল দ্বারা সাংবাদিক অথচ দুই লাইন সংবাদ লেখার ক্ষমতা তার নেই। এই নিয়ে একটি সাংবাদিক সংগঠন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে।। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি, এসব আওয়ামী লীগের দোসরদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিশেষ সূত্রে জানা যায়, এক মহিলার কাছ থেকে একটি পত্রিকার প্রতিনিধি করিয়ে দেওয়ার নামে নিয়েছিল ১০ হাজার টাকা এই প্রতারক আবুল বাসার মজুমদার কিন্তু সেই মহিলার প্রেস আইডি কার্ড না দিয়ে সম্পন্ন টাকা মেরেদেন ও-ই নারীর দোষ একটাই তার অপকর্মের সঙ্গী না হওয়া। তার মূল ব্যবসা বিভিন্ন নারীদের কে প্রেস আইডি কার্ড বানিয়ে দিয়ে বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে অপকর্ম করার জন্য পাঠিয়ে অর্থ আদায় করা। কিন্তু মজার বিষয় সে কি করে হঠাৎ হয়ে যায়- লক্ষ্য টাকার মালিক? তার নেই কোন উচ্চশিক্ষা নেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক ও সাংবাদিক সংগঠনের সিনিয়র নেতা ও বাংলাদেশ সচিবালয় এর অ্যাক্রিডিটেশন (পিআইডি) আইডি কার্ড ব্যবহার করে লোকো সমাজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এই আওয়ামী লীগের দোসর আবুল বাসার মজুমদার। সাংবাদিকতার ফাঁদ তৈরি করে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েদের সাংবাদিকতার মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে করে যাচ্ছে আইডি কার্ড বাণিজ্য। তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা। তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ উঠেছে পত্রিকার আইডি কার্ড দেওয়ার কথ্য বলে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার নারী ও পুরুষের কাছ থেকে ১০ থেকে বিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার অফিস সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে এক ব্যক্তির কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে বেশ কিছু টাকা, এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন এই প্রতারক আবুল বাসার মজুমদারের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর তার পিতার নাম শহীদউল্লাহ মজুমদার, গ্রাম: লাউকরা ডাকঘর: হাটিলাটঙ্গীরপার উপজেলা: হাজীগঞ্জ। এসব টাকা দিয়ে জমি রেখে চাষাবাদ ও বাড়ি করেন।

ভুক্তভোগীরা এই প্রতারক আবুল বাসার মজুমদার কে টাকার জন্য চাপ দিলে সে সবাইকে মামলা হামলা ও ডিবি পুলিশের ভয় দেখিয়ে এড়িয়ে যায়। তার এসব প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেও কোন প্রতিকার পাননি বলে জানা যায়। তথ্যসূত্রে জানা যায় সম্প্রতি সময় আবারো ব্ল‍্যাকমেইলিং এর মতো গুরুতর কাজে জড়িয়ে পড়ে এই প্রতারক আবুল বাসার মজুমদার। বিভিন্ন মিডিয়ার বাটপারি সাইনবোর্ড লাগিয়ে প্রতিনিধি বিজ্ঞাপন দিয়ে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পেটে বোমা মারলেও দু’লাইন লেখার যোগ্যতা নেই, অথচ রিপোর্টার পরিচয়ে তারাই খুলে বসেছে বহুমুখী প্রতারণার বাণিজ্য। সংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে ভুয়া সাংবাদিকদের তৎপরতা দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। যত্রতত্র ফেসবুক লাইভ, নামসর্বস্ব পত্রিকা ও অনলাইনের প্রেস লেখা স্টিকার ও আইডি কার্ড ঝুলিয়ে অবাধে চলাচল করছে সাংবাদিক নামধারী ভুয়া ব্যক্তিরা।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা শহরে ভুয়া সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। নামসর্বস্ব পত্রিকা ও অনিবন্ধিত ভুঁইফোঁড় নিউজ পোর্টালের নামে কিছু আসাধু লোক সাংবাদিক পরিচয়ে জনসাধারণের কাছ থেকে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। তারা যখন যেখানে ইচ্ছে হানা দিচ্ছে, সাধারণ মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ফাঁদে ফেলছে। এতে সাংবাদিকতার মতো একটি মহান পেশার মর্যাদা হুমকির মুখে পড়েছে। ভুয়া সাংবাদিকদের অপ্রতিরোধ্য দৌরাত্ম্যে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকেরা। পাশাপাশি বিরক্ত হচ্ছেন প্রশাসনের লোকজন। তবে এসব প্রতারকের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে প্রতারণার অভিযোগে দু-একজন গ্রেপ্তার হলেও জেল থেকে বের হয়ে ফের একই অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে তারা।

সাংবাদিকতার নামে প্রতারকদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনার তাগিদ দিয়েছেন পেশাদার সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা। পাশাপাশি গণমাধ্যম ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণেরও তাগিদ দিয়েছেন তারা। তবে ভুয়া সাংবাদিক শনাক্তের পাশাপাশি অপসাংবাদিকতা রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর দেশের বিভিন্ন স্থানে অপরাধীরাও নিজেকে বাঁচাতে গলায় ভুঁইফোঁড় অনলাইন ও পত্রিকার কার্ড ঝুঁলিয়ে সাংবাদিক বনে গেছেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, চিহ্নিত মাদক কারবারি ও দেহব্যবসায়ীদের সহযোগী বানিয়ে প্রশাসনিক সহায়তা নিয়ে গড়ে উঠেছে ভুয়া সাংবাদিকদের ভয়ংকর সিন্ডিকেট। এরা প্রায়ই থানার দারোগাদের সঙ্গে গভীর রাত পর্যন্ত আড্ডায় মত্ত থাকে। পুলিশের ‘সোর্স’ হিসেবে তারাই বিশ্বস্ত, ঘুষ বাণিজ্যে পুলিশের সহায়ক হিসেবে কাজ করে। থানায় আসা-যাওয়া ভুক্তভোগী মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে হেনস্তা করা, আসামি ধরানো-ছাড়ানো, বিচার-সালিশের মাধ্যমে যে কোনো অপরাধের মীমাংসা করিয়ে দেওয়ার মতো জঘন্য দালালিতে মেতে উঠেছে এসব প্রতারক। এ ছাড়া এই চক্রগুলো দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে দেশের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। মিথ্যা-বানোয়াট সংবাদ প্রচারের কথা বলে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে থাকে।

তারা আরও বলেন, ‘নৈতিক সাংবাদিকতার বিষয়টি অনেকটাই সাংবাদিকের ব্যক্তিচরিত্রের ওপর নির্ভর করে। অনেকেই যেমন নানা কারণে সাংবাদিকতার এথিকস উপেক্ষা করছেন, কেউ কেউ আবার অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও সততার সঙ্গে সাংবাদিকতা করছেন। এ পেশায় সাংবাদিকতা বিষয় নিয়ে লেখাপড়া করা ছেলে-মেয়েদের সংখ্যা বাড়ছে; এতে গণমাধ্যমের সার্বিক চিত্র ভবিষ্যতে আরও ইতিবাচকভাবে বদলাবে। তাই আইন-শৃংখলা প্রতিপক্ষের উচিত এসব প্রতারকদের এখনই লাগাম ধরা।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে তার আসল রহস্য এই আয়ের উৎস কোথায়? আবুল বাসার মজুমদারের রয়েছে রাজধানীতে এক বিশাল অপরাধ জগতের সিন্ডিকেট ওই সিন্ডিকেট দ্বারা চলছে রমরমা সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে শিল্পপতিদের ব্ল্যাকমেল করার বাণিজ্যের অভিযোগ, যে সকল এলাকাগুলোতে প্রতারণা ফাঁদ তৈরি করে সুন্দরী মেয়ে দিয়ে, ওই সকল স্থানের নাম, উত্তরা, রামপুরা, গুলশান,নানী ,গাবতলী, গুলিস্তান, শাহজাদপুর, ভাটারা এলাকায় রয়েছে বিশাল এক নারী প্রতারণার ফাঁদ।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) জানিয়েছে, বেশ কিছু অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিরুদ্ধে হয়রানি ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ রয়েছে। বিষয়গুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন, একশ্রেণির নামসর্বস্ব পত্রিকার সম্পাদকেরা ভুয়া সাংবাদিকদের দিয়ে সিন্ডিকেট করে ব্ল্যাকমেইলিং করে থাকেন। তাদের কারণে পেশাদার সাংবাদিকদের সম্মানহানি হচ্ছে। এই চক্রগুলো প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর হতে হবে। পাশাপাশি এদের যেখানেই পাওয়া যাবে, ধরে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে।

ভুয়া সাংবাদিকদের বিষয়ে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. আব্দুস সবুর বলেন, এদের প্রতারণার কথা আমাদের কানেও আসে। নামধারি এসব সাংবাদিকের কারণে যাতে পেশাদার সাংবাদিকদের কোনো ক্ষতি বা বদনাম না হয়, সেই ব্যবস্থা করা হবে। এরই মধ্যে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ফেনীসহ বেশ কয়েকটি জেলায় আমাদের কাজ শুরু করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি কর্মশালার ব্যবস্থা করা হবে। শিগগিরই ঢাকার সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ভুয়া ও অপসাংবাদিকতা রুখতে কিছু কাজ শুরু হয়েছে। শিগগিরই আরও বড় পরিসরে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে পারব: চলবে.!