1:02 am, Wednesday, 5 November 2025

নির্বাচনী ট্রেনে চড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো: এসব নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে সর্বত্র

দিগন্ত প্রতিদিন

screenshot 20250916 001754

স্টাফ রিপোর্টার:
দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক ধরে দেশে ছিল না সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ, ভোট উৎসব কিংবা মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ভোটাররা ভোটের উচ্ছ্বাস করতেই পারেনি। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে সেই অবস্থার সমাপ্তি ঘটেছে। জাতীয় নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। তবে তার আগে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ছাত্র সংসদের নির্বাচন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন শেষ। ডাকসু ও জাকসুর পর দেশের মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের চোখ এখন রাকসু ও চাকসুর দিকে।

গতকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হলো। অন্যদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। বলা যায়, নির্বাচনী ট্রেনে চড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ক্যাম্পাসভিত্তিক এসব নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে সর্বত্র। কারা জয়ী হচ্ছেন, কেন হচ্ছেন, প্রার্থীদের ব্যক্তিগত পরিচয়, দলীয় প্রভাব, নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা তো বটেই আলোচনায় থাকছে এসব নির্বাচনের প্রভাব কতটা পড়বে জাতীয় নির্বাচনে তা নিয়েও।

ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ৯ সেপ্টেম্বর। এতে সহ-সভাপতি (ভিপি) হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম। ছাত্রশিবিরের এই নেতা ভোট পান ১৪ হাজার ৪২টি। বলা চলে, ডাকসু নির্বাচনে এবার দাপট দেখিয়েছে ছাত্রশিবির। এরপর জাকসু নির্বাচনে ৮ ঘণ্টায় ১২ হাজার ভোটারের মধ্যে ৬৭ শতাংশ ভোট পড়ে। সেই ভোট গুনতে সময় লেগেছে ৪৮ ঘণ্টা। আর সবমিলিয়ে ফলাফল পেতে লাগে ৩ দিন। ৩৩ বছর পর আয়োজিত জাকসু নির্বাচনে এটাই প্রথম নজির। এই নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের আবদুর রশিদ জিতু। আর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হয়েছেন শিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের মাজহারুল ইসলাম।জাকসুর ২৫টি পদের মধ্যে ২০টিতেই জয় পেয়েছে শিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট। বাকি চারটির মধ্যে দুটি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ও দুটি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত হয়েছে। দেশের বড় দুটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের দাপুটে জয় নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। ভাবনায় ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিক দলসহ অন্যদের। যেখানে ডাকসু আর জাকসুতে এর আগে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলো নির্বাচনে ভালো ফলাফল করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হলগুলোর প্রায় বেশিরভাগ ভোটই পড়েছে ছাত্রশিবিরের ঝুলিতে। জাহাঙ্গীরনগরেও প্রায় একই সফলতা পেয়েছে ছাত্রশিবির।

এদিকে, চাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হলো গতকাল। আগামীকাল মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত প্রার্থীরা এ মনোনয়নপত্র নিতে পারবেন প্রার্থীরা। বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। চাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় নতুন করে ১ হাজার ৭৬৮ শিক্ষার্থী যুক্ত হচ্ছে এবার। এ হিসাবে বর্তমানে চাকসুতে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৪ জন। ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১২ অক্টোবর। অপরদিকে, রাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। ছাত্রশিবির এরইমধ্যে প্যানেল ঘোষণা করেছে সেখানে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অনুপস্থিতিতেও তেমন একটা সুবিধা করতে পারছে না ছাত্রদল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ডাকসু-জাকসুর মতো রাকসু ও চাকসুর ভোটেও সমীকরণ বদলে দিতে পারে ছাত্রশিবির। চাকসু নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম বিতরণের প্রথম দিন মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন ৭ ভিপি প্রার্থীসহ ২৬ জন। গতকাল বিকাল সাড়ে তিনটায় এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন। ২৬ জনের মধ্যে ভিপি পদে ৭ জন, জিএস এবং এজিএস পদে ২ জন করে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিতরণ কার্যক্রম চলবে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। গত ২৮ আগস্ট ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত তালিকা। আর ভোটগ্রহণ হবে ১২ অক্টোবর। চাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৭ জন। চাকসু ও হল সংসদের নির্বাচনে প্রথম প্যানেল হিসেবে মনোনয়ন নিল ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জোটের সমন্বিত প্যানেল ‘দ্রোহ পর্ষদ’।  গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্যানেলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইফাজ উদ্দিন ইমু।

তিনি জানান, তাদের প্যানেলের নাম ‘দ্রোহ পর্ষদ’। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সমন্বয়ে এই জোট প্যানেল গঠন করা হয়েছে। এতে সহ-সভাপতি হিসেবে লড়বেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ঋজুলক্ষ্মী অবরোধ। তিনি নাট্যকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রার্থী হবেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইয়াজউদ্দিন ইমু। তিনি চবির ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে লড়বেন ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক শেখ জুনায়েদ কবির। তিনি চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। চাকসু নির্বাচনে প্রথম রাজনৈতিক দল হিসেবে প্যানেলের নাম ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদ। ‘চাকসু ফর র‌্যাপিড চেঞ্জ’ নামে পূর্ণ প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন তারা। সকালে সাড়ে ৮টার দিকে মুঠোফোনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক তামজিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, দলের সবার মতামতের ভিত্তিতে এই নামে প্যানেলের নাম ঘোষণা করেছি। একইসঙ্গে আমরা আসন্ন চাকসু নির্বাচনে এককভাবে পূর্ণ প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে কেউ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইলে সে ব্যাপারে আমরা ভেবে দেখব। এদিকে, রাকসু সংসদ ও হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ব্যালট নম্বর বরাদ্দের নীতিমালা সংশোধন করেছে নির্বাচন কমিশন। গত শনিবার রাতে এক জরুরি সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গতকাল বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে লটারির মাধ্যমে রাকসু ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি প্রার্থীদের ব্যালট নম্বর বরাদ্দ দেওয়া হবে। এর আগে শনিবার রাতে ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলসহ কয়েকটি প্যানেলের ভিপি প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে বিদ্যমান নিয়ম নিয়ে আপত্তি জানান। পরে কমিশন জরুরি বৈঠকে বসে এবং রাতেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত নতুন নীতিমালা প্রকাশ করে।আগের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী প্যানেলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে লটারির মাধ্যমে কেবল প্যানেলের ক্রমধারা নির্ধারণ হতো। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হতো বাংলা বর্ণমালার আদ্যক্ষর ক্রমানুসারে।নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, এবার রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রতিটি পদের প্রতিটি প্রার্থীর ব্যালট নম্বর সরাসরি লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। গত মঙ্গলবার শেরে-বাংলা ফজলুল হক হলসহ কয়েকটি হলে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আগেই ব্যালট নম্বর বরাদ্দ দেওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আপত্তি জানিয়েছিলেন। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছিল। নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শনিবার ছিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন দুইজন ভিপি ও একজন জিএসসহ মোট ১৫ জন প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। চূড়ান্ত প্রার্থিতা তালিকা প্রকাশের পর গতকাল বিকেলেই লটারির মাধ্যমে ব্যালট নম্বর দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৫৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য প্রফে. ড. ইতরাৎ হোসেন জুবেরীর কাছে ছাত্র সংসদের দাবি উত্থাপন করা হলেও ১৯৫৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খানের হস্তক্ষেপে ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ওই বছরই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রথম ভিপি হিসেবে মনিরুজ্জামান মিয়া ও জিএস হিসেবে আব্দুর রাজ্জাক খান নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করার ফলে ১৯৫৮-৬২ সাল পর্যন্ত রাকসুর কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে ক্যাম্পাসে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন শুরু হলে শিক্ষার্থীরা পুনরায় ছাত্র সংসদ চালু করতে তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদর নিকট জোর দাবি জানায়। ছাত্রছাত্রীদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৬৩ সালের প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুনরায় রাকসু কার্যক্রমের অনুমতি দেয়। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠার পরে এখন পর্যন্ত মোট ১৪ বার রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।পদাধিকারবলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাকসুর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সদস্যরা সরাসরি ভোট দিয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং অন্যান্য পদ নির্বাচন করেন। রাকসু সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে রুহুল কবির রিজভী আহমেদ ও রুহুল কুদ্দুস বাবু এক বছরের জন্য যথাক্রমে ভিপি ও জিএস নির্বাচিত হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়, ১৯৭০ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এছাড়া সামরিক শাসনের জন্য ১৯৭৫-১৯৮০ এবং ১৯৮১-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত ছিল। ১৯৮৯ সাল এর পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত রাকসু নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরপরই গঠিত হয়েছিল চাকসু। শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীদের মানসিক সংস্কৃতির বিকাশ, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যকার পারস্পরিক সৌহার্দ্যবোধ ও রাষ্ট্রের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্যই গঠিত হয় এটি। প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। পরের বছর ১৯৭১ সালেই হয় এর পরের নির্বাচন। এর পর ১৯৭৩ ও ১৯৮০ সালে হয় পরবর্তী দুইটি নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ১৯৯০ সালে ছাত্রঐক্য নেতা ফারুকুজ্জামান নিহত হওয়ার অজুহাতে বন্ধ করে দেওয়া হয় চাকসু নির্বাচন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত অকেজো হয়ে পড়ে ছিল ছাত্রছাত্রীদের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া চর্চার প্রাণ কেন্দ্রটি। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচন আয়োজনের জন্য ১২ অক্টোবর ভোটের দিন রেখে তফসিল ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 06:27:17 pm, Monday, 15 September 2025
141 Time View

নির্বাচনী ট্রেনে চড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো: এসব নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে সর্বত্র

Update Time : 06:27:17 pm, Monday, 15 September 2025

স্টাফ রিপোর্টার:
দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক ধরে দেশে ছিল না সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ, ভোট উৎসব কিংবা মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ভোটাররা ভোটের উচ্ছ্বাস করতেই পারেনি। জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে সেই অবস্থার সমাপ্তি ঘটেছে। জাতীয় নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। তবে তার আগে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ছাত্র সংসদের নির্বাচন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন শেষ। ডাকসু ও জাকসুর পর দেশের মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের চোখ এখন রাকসু ও চাকসুর দিকে।

গতকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হলো। অন্যদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। বলা যায়, নির্বাচনী ট্রেনে চড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ক্যাম্পাসভিত্তিক এসব নির্বাচন নিয়ে আলোচনা চলছে সর্বত্র। কারা জয়ী হচ্ছেন, কেন হচ্ছেন, প্রার্থীদের ব্যক্তিগত পরিচয়, দলীয় প্রভাব, নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা তো বটেই আলোচনায় থাকছে এসব নির্বাচনের প্রভাব কতটা পড়বে জাতীয় নির্বাচনে তা নিয়েও।

ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ৯ সেপ্টেম্বর। এতে সহ-সভাপতি (ভিপি) হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম। ছাত্রশিবিরের এই নেতা ভোট পান ১৪ হাজার ৪২টি। বলা চলে, ডাকসু নির্বাচনে এবার দাপট দেখিয়েছে ছাত্রশিবির। এরপর জাকসু নির্বাচনে ৮ ঘণ্টায় ১২ হাজার ভোটারের মধ্যে ৬৭ শতাংশ ভোট পড়ে। সেই ভোট গুনতে সময় লেগেছে ৪৮ ঘণ্টা। আর সবমিলিয়ে ফলাফল পেতে লাগে ৩ দিন। ৩৩ বছর পর আয়োজিত জাকসু নির্বাচনে এটাই প্রথম নজির। এই নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের আবদুর রশিদ জিতু। আর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হয়েছেন শিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের মাজহারুল ইসলাম।জাকসুর ২৫টি পদের মধ্যে ২০টিতেই জয় পেয়েছে শিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট। বাকি চারটির মধ্যে দুটি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ও দুটি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত হয়েছে। দেশের বড় দুটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের দাপুটে জয় নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। ভাবনায় ফেলে দিয়েছে রাজনৈতিক দলসহ অন্যদের। যেখানে ডাকসু আর জাকসুতে এর আগে বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলো নির্বাচনে ভালো ফলাফল করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হলগুলোর প্রায় বেশিরভাগ ভোটই পড়েছে ছাত্রশিবিরের ঝুলিতে। জাহাঙ্গীরনগরেও প্রায় একই সফলতা পেয়েছে ছাত্রশিবির।

এদিকে, চাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হলো গতকাল। আগামীকাল মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত প্রার্থীরা এ মনোনয়নপত্র নিতে পারবেন প্রার্থীরা। বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। চাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় নতুন করে ১ হাজার ৭৬৮ শিক্ষার্থী যুক্ত হচ্ছে এবার। এ হিসাবে বর্তমানে চাকসুতে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৪ জন। ভোটগ্রহণ হবে আগামী ১২ অক্টোবর। অপরদিকে, রাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। ছাত্রশিবির এরইমধ্যে প্যানেল ঘোষণা করেছে সেখানে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অনুপস্থিতিতেও তেমন একটা সুবিধা করতে পারছে না ছাত্রদল।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ডাকসু-জাকসুর মতো রাকসু ও চাকসুর ভোটেও সমীকরণ বদলে দিতে পারে ছাত্রশিবির। চাকসু নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম বিতরণের প্রথম দিন মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন ৭ ভিপি প্রার্থীসহ ২৬ জন। গতকাল বিকাল সাড়ে তিনটায় এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন। ২৬ জনের মধ্যে ভিপি পদে ৭ জন, জিএস এবং এজিএস পদে ২ জন করে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিতরণ কার্যক্রম চলবে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। গত ২৮ আগস্ট ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত তালিকা। আর ভোটগ্রহণ হবে ১২ অক্টোবর। চাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৭ জন। চাকসু ও হল সংসদের নির্বাচনে প্রথম প্যানেল হিসেবে মনোনয়ন নিল ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জোটের সমন্বিত প্যানেল ‘দ্রোহ পর্ষদ’।  গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্যানেলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইফাজ উদ্দিন ইমু।

তিনি জানান, তাদের প্যানেলের নাম ‘দ্রোহ পর্ষদ’। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সমন্বয়ে এই জোট প্যানেল গঠন করা হয়েছে। এতে সহ-সভাপতি হিসেবে লড়বেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ঋজুলক্ষ্মী অবরোধ। তিনি নাট্যকলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রার্থী হবেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইয়াজউদ্দিন ইমু। তিনি চবির ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এছাড়া যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে লড়বেন ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক শেখ জুনায়েদ কবির। তিনি চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। চাকসু নির্বাচনে প্রথম রাজনৈতিক দল হিসেবে প্যানেলের নাম ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদ। ‘চাকসু ফর র‌্যাপিড চেঞ্জ’ নামে পূর্ণ প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন তারা। সকালে সাড়ে ৮টার দিকে মুঠোফোনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক তামজিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, দলের সবার মতামতের ভিত্তিতে এই নামে প্যানেলের নাম ঘোষণা করেছি। একইসঙ্গে আমরা আসন্ন চাকসু নির্বাচনে এককভাবে পূর্ণ প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে কেউ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইলে সে ব্যাপারে আমরা ভেবে দেখব। এদিকে, রাকসু সংসদ ও হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে ব্যালট নম্বর বরাদ্দের নীতিমালা সংশোধন করেছে নির্বাচন কমিশন। গত শনিবার রাতে এক জরুরি সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গতকাল বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে লটারির মাধ্যমে রাকসু ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি প্রার্থীদের ব্যালট নম্বর বরাদ্দ দেওয়া হবে। এর আগে শনিবার রাতে ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলসহ কয়েকটি প্যানেলের ভিপি প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে বিদ্যমান নিয়ম নিয়ে আপত্তি জানান। পরে কমিশন জরুরি বৈঠকে বসে এবং রাতেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত নতুন নীতিমালা প্রকাশ করে।আগের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী প্যানেলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে লটারির মাধ্যমে কেবল প্যানেলের ক্রমধারা নির্ধারণ হতো। আর স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হতো বাংলা বর্ণমালার আদ্যক্ষর ক্রমানুসারে।নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, এবার রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে প্রতিটি পদের প্রতিটি প্রার্থীর ব্যালট নম্বর সরাসরি লটারির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। গত মঙ্গলবার শেরে-বাংলা ফজলুল হক হলসহ কয়েকটি হলে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আগেই ব্যালট নম্বর বরাদ্দ দেওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আপত্তি জানিয়েছিলেন। এরপর থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছিল। নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শনিবার ছিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন দুইজন ভিপি ও একজন জিএসসহ মোট ১৫ জন প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। চূড়ান্ত প্রার্থিতা তালিকা প্রকাশের পর গতকাল বিকেলেই লটারির মাধ্যমে ব্যালট নম্বর দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৫৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য প্রফে. ড. ইতরাৎ হোসেন জুবেরীর কাছে ছাত্র সংসদের দাবি উত্থাপন করা হলেও ১৯৫৭ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খানের হস্তক্ষেপে ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ওই বছরই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রথম ভিপি হিসেবে মনিরুজ্জামান মিয়া ও জিএস হিসেবে আব্দুর রাজ্জাক খান নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করার ফলে ১৯৫৮-৬২ সাল পর্যন্ত রাকসুর কার্যক্রম বন্ধ থাকে। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে ক্যাম্পাসে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন শুরু হলে শিক্ষার্থীরা পুনরায় ছাত্র সংসদ চালু করতে তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদর নিকট জোর দাবি জানায়। ছাত্রছাত্রীদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৬৩ সালের প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুনরায় রাকসু কার্যক্রমের অনুমতি দেয়। ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠার পরে এখন পর্যন্ত মোট ১৪ বার রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।পদাধিকারবলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাকসুর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সদস্যরা সরাসরি ভোট দিয়ে সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) এবং অন্যান্য পদ নির্বাচন করেন। রাকসু সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ১৯৮৯ সালের নির্বাচনে রুহুল কবির রিজভী আহমেদ ও রুহুল কুদ্দুস বাবু এক বছরের জন্য যথাক্রমে ভিপি ও জিএস নির্বাচিত হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়, ১৯৭০ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এছাড়া সামরিক শাসনের জন্য ১৯৭৫-১৯৮০ এবং ১৯৮১-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত ছিল। ১৯৮৯ সাল এর পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত রাকসু নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরপরই গঠিত হয়েছিল চাকসু। শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীদের মানসিক সংস্কৃতির বিকাশ, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যকার পারস্পরিক সৌহার্দ্যবোধ ও রাষ্ট্রের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্যই গঠিত হয় এটি। প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। পরের বছর ১৯৭১ সালেই হয় এর পরের নির্বাচন। এর পর ১৯৭৩ ও ১৯৮০ সালে হয় পরবর্তী দুইটি নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ১৯৯০ সালে ছাত্রঐক্য নেতা ফারুকুজ্জামান নিহত হওয়ার অজুহাতে বন্ধ করে দেওয়া হয় চাকসু নির্বাচন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত অকেজো হয়ে পড়ে ছিল ছাত্রছাত্রীদের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া চর্চার প্রাণ কেন্দ্রটি। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচন আয়োজনের জন্য ১২ অক্টোবর ভোটের দিন রেখে তফসিল ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।