সাংবাদিকের ‘হাত-পা কেটে’ হত্যার হুমকি দিলেন আ.লীগ নেতা সেলিম মিয়া

বিশেষ প্রতিনিধি:
নেত্রকোণার মদনে নিজাম তালুকদার নামের এক সাংবাদিককে হাত-পা কেটে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সেলিম মিয়া নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
গত সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সেলিম মিয়া মোবাইল ফোনে ওই সাংবাদিককে হুমকি দেন।
এ সম্পর্কিত ৩ মিনিট ২১ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী নিজাম জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মদন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। নিজাম তালুকদার দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার মদন উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি মদন উপজেলা প্রেস ক্লাবের প্রচার ও সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক। মদন উপজেলা সদরের জাহাঙ্গীরপুর সেন্টার এলাকায় বসবাস করেন। অভিযুক্ত সেলিম মিয়া উপজেলার চানগাঁও গ্রামের মড়লপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
তিনি মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনে তিনি চানগাঁও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। এ বিষয়ে সাংবাদিক নিজাম তালুকদার জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মদনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে গত ২৩ মে মেহেদি হাসান ওরফে নবাব নামের কলেজপড়ুয়া এক শিক্ষার্থী থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় নেত্রকোণা-৪ “মোহনগঞ্জ-মদন-খালিয়াজুরি” আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাজ্জাদুল হাসানকে প্রধান করে ৬৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
এজাহারে মাঘান ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিদ্যা মিয়াকেও আসামি করা হয়। বিদ্যা মিয়ার এক ছেলে প্রশাসনে কর্মরত। এ নিয়ে সাংবাদিক নিজাম তালুকদার সংবাদ প্রকাশ করেন।
নিজামের দাবি, সংবাদের জেরে বিদ্যা মিয়ার আত্মীয় সেলিম মিয়া ক্ষিপ্ত হন। গত সোমবার দুপুরে তাকে (নিজাম) মোবাইল ফোনে হাত-পা কেটে এলাকাছাড়া করার হুমকি দেন। পাশাপাশি বেশি বাড়াবাড়ি না করার জন্য সতর্ক করেন। নিজাম তালুকদার বলেন, ‘হুমকি দেওয়া কল রেকর্ড সংযুক্ত করে তিনি গত সোমবার রাতে থানায় জিডি করেছেন। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।’
এ বিষয়ে সেলিম মিয়া জানান, ‘সাংবাদিক নিজাম আমার আত্মীয় হন। ওই দিন আমি অবশ্য রেগে গিয়ে তাকে গালমন্দ করেছি, এটা অস্বীকার করছি না। তবে তাকে হাত-পা কেটে এলাকাছাড়া করার কথা বলিনি। বিষয়টির জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। এটা নিজেদের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।’
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুল আল শাহ বলেন, ‘জিডির বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।