সরকারি জমি উদ্ধারে গিয়ে মবের শিকার হয়েছেন ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা

স্টাফ রিপোর্টার:
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় নিমগাছি ইউনিয়নে সরকারি জমি উদ্ধারে গিয়ে মবের শিকার হয়েছেন ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন ও অফিস সহায়ক জেসমিন আক্তার। এ সময় তাদের একটি দোকান ঘরে আটক রেখে মুচলেকা লেখা স্ট্যাম্পে সই নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে মবের শিকার ওই কর্মকর্তা বাদী হয়ে ৫ নারীসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ধুনট উপজেলার জয়শিং-বগুড়া সড়কের পিরাপাট বিএনপি বাজার এলাকায় সুকলু মিয়া ও তার ভাইদের সাড়ে ছয় শতক জমি ছিল। বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ রাস্তা নির্মাণের জন্য ২০০৪ সালে জমিটি অধিগ্রহণ করে। সুকলু মিয়া অধিগ্রহণ করা ওই জমির মূল্য বাবদ ২০ হাজার ৬১৬ টাকা ৭৫ পয়সা উত্তোলন করেছেন। সড়ক নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করা অবশিষ্ট জমিতে সুকলু মিয়া ও তার সহযোগী শাহাদুল হোসেন মন্ডল, গোদা মন্ডল, আব্দুল কাফী, সফিকুল ইসলাম, ইংরেজ উদ্দিন ও কালুমিয়া অবৈধভাবে দখল করে সেখানে ঘর নির্মাণ করেন। এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
এলাকাবাসীর পক্ষে ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম প্রতিকার চেয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সড়কের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার জন্য সুকলু মিয়া ও তার সহযোগীদের নির্দেশ দেন। তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করে সড়কের জায়গায় আরও স্থাপনা নির্মাণ করেন। ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওই অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দিতে ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনকে নির্দেশ দেন।
এ অবস্থায় ৩ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টায় আনোয়ার হোসেন পিরাপাট বাজার এলাকায় গিয়ে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় সুকলু ও তার সহযোগীসহ অন্তত ৪০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী মব সৃষ্টি করে তাকে ঘিরে ধরে। তাকে মারধর ও অবরুদ্ধ করে। এরপর ৩০০ টাকা মূল্যমানের সাদা স্ট্যাম্পে সই করে নেয়। প্রায় তিন ঘন্টা পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ সই নেওয়া স্ট্যাম্পটি জব্দ করেন। এ ঘটনায় ভূমি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পিরাপাট গ্রামের শাখাওয়াত, শিমুল, চঞ্চল ইংরেজ আলী ও ৫ নারী সহ ২১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে।