সরকারি একোয়ার্কৃত জমি নিয়ে আওয়ামী দোসর মনিরুজ্জামান গং বনাম ডেমরা বাঁশি মুখোমুখি” হতে পারে যে কোন সময় সংঘর্ষ

এম রাসেল সরকার:
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ জনপদ ডেমরা এলাকাকে শতভাগ মাদকমুক্ত করতে তরুন-যুবকদের খেলাধূলার প্রতি মনোনিবেশের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই সরকারি একোয়ার্কৃত জমি দখল করেছে আওয়ামী লীগের দোসর মনিরুজ্জামান গং। ডেমরা এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন। হতে পারে যে কোন সময় বড় ধরনের সংঘর্ষ। এদিকে এলাকায় একটি মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের জোর দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গত বছরের ৫ আগস্ট স্টেডিয়াম নির্মাণের লক্ষে ডিএসসিসির ৭০ নং ওয়ার্ডের পাইটি এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে সরকারি জমি (সড়ক ও জনপদ) উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় বাসিন্দারা সহ আরও কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা দাঁড়ান। তবে ডেমরার সরকারি জমি জবর-দখলের পাঁয়তারা করছে জুম সোয়েটার্স এর জি এম মনিরুজ্জামান ও তার দোসররা। তিনি বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ডেমরা থানার আহ্বায়ক। বিগত সময়ে তিনি নানাভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছেন এবং জুলাই পরবর্তীতে অদ্যবধি পলাতক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নানাভাবে পৃষ্টপোষকতা করে আসছেন বলে অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ডেমরার পাইটি এলাকায় জুম গার্মেন্টস কর্তৃক দখলকৃত সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করে খেলার মাঠ নির্মানে ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়ান স্থানীয় বাসিন্দারা। অতঃপর আওয়ামী লীগের দোসর মনিরুজ্জামান গং ক্ষিপ্ত হয়ে মোস্তফা স্কুল এণ্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক মোঃ গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দেন। পরবর্তীতে সেই মামলা তদন্ত শেষে তাকে খালাস দেয়া হলে পরবর্তীতে আবারও না রাজি দেয় কুচক্রী মহলটি। পরবর্তীতে তার অজান্তে ওয়ারেন্ট হলে গ্রেফতার হন গোলাম মোস্তফা স্কুল এণ্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা।
ভুক্তভোগী প্রিন্সিপাল গোলাম মোস্তফা বলেন, সরকারী সম্পত্তি জুম সোয়োটার্স এর মালিক ভূমিদস্যু সোনিয়া তালুকদার গং হতে উদ্ধার করে ডেমরা মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা জন্য ২০১১ সাল থেকে লড়াই করে যাচ্ছে এলাকাবাসী।
তবে পুলিশ জানায়, ডেমরার পাইটি এলাকার জুম গার্মেন্টসের জমি দখলের অভিযোগে আদালতের নির্দেশে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হয়। এ ঘটনায় গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা করে (মামলা নং সিআর-২৭৯/২৪)। মামলায় দণ্ডবিধির ৪৪৭, ৩৭৯, ৪২৭, ৫০৫, ১৪৯ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, জমি দখলের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তদন্তভার দেওয়া হয় ডিবি পুলিশকে। ডিবির তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় আদালত গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই পরোয়ানার ভিত্তিতে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করি। এরআগে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকারী সম্পত্তি জুম সেয়োটার্সের মালিক সোনিয়া তালুকদার গং হতে উদ্ধার করে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। একইসঙ্গে ওই জমিতে একটি মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা নাম প্রকাশ না করারশর্তে জানান, ডেমরা থানার দেইল্ল্যা মৌজাস্থিত ১৪, ১৫, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪ নং দাগের কম/বৈশী ৩.৫৭ একর জমি/ভূমি ৪০/৭২-৭৩ নং, এল, এ. কেইসের মাধ্যমে সড়ক ও জনপদ কাঁচপুর ব্রীজের ঢালে মাটির জরাটের জন্য অধিগ্রহণ করে। এখানে বিশাল আকারের ১টি দীঘি বা পুকুর তৈরি হয়। সেই পুকুরে ৪০ বছর যাবৎ এলাকার মানুষ সাতার কাটত, গোসল করত, মাছ ধরত, নৌকা বাইচ দিত, অযু করত, সর্বোপরি মানুষের কল্যাণে এটি ছিল।
কিন্তু সুঃখের বিষয় জুম সোয়েটারের মালিক সোনিয়া তালুকদার গং খাড়া দলিল, ভূয়া দলিলের মাধ্যমে পুকুরটি আত্মসাতের জন্য মাটি ভরাট করে। এরপরই এলাকার ছাত্র জনতা আন্দোলন ও মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানায়। তারা এও জানান, মহামান্য হাইকোর্টের রিট পিটিশন ৯২৯৮/১২ মামলা হয় যা ১৬/০৮/২০১৮ ইং তারিখে রায় হয়। রায়ে তাকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং জমিতে প্রবেশে নিষেধ করে। কোনো অবস্থাতেই তাকে ভূমিটি অবমুক্ত করে দেওয়া হবে না এ মর্মে আদেশ প্রদান করেন।
কোর্টের আদেশ অমান্য করে সাবেক স্বৈরাচার সরকারের লোকদের সহযোগিতায় বার বার দখল করার চেষ্টা করে কিন্তু ব্যর্থ হয়। বিগত ১/০৪/২০২৪ ইং তারিখে স্বৈরাচার সরকারের দোসরদের সহযোগিতায় অবৈধভাবে বাউন্ডারি ওয়াল করে, তখনও ছাত্র জনতা আন্দোলন ও মানববন্ধন করে ব্যর্থ হয়।
স্বৈরাচার সরকার পতনের পর ৫ই আগষ্ট ২০২৪ ইং তারিখে উত্তেজিত ছাত্রজনতা ও এলাকাবাসী সেই বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙ্গে দিয়ে পুনরায় তার কাছ হতে দখল মুক্ত করে। একইসঙ্গে জমিটি সোনিয়া তালুকদার গংদের হাত থেকে মুক্ত করে একটি মিনি স্টেডিয়াম ঘোষণা করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। এবং স্বৈরাচারের দোসর আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান মনির ও ভূমিদস্যু সোনিয়া তালুকদার গংদের কে দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য জোর দাবি জানান এবং ডেমরার পাইটি এলাকায় জুম গার্মেন্টস কর্তৃক দখলকৃত সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করে একটি খেলার মাঠ নির্মানে জন্য জোর দাবি জানান।