7:46 am, Tuesday, 9 September 2025

মুন্সীগঞ্জে পুলিশ ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ

dde8d7fab0fb3f5ce29e5c173150bda0 68ac938d3d53d

 

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় গুয়াগাছিয়ায় চালু হওয়া পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পের টহলরত পুলিশ বোর্ডকে লক্ষ্য করে শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে স্থানীয় জলদস্যুরা। আত্মরক্ষায় পুলিশের গুলি বর্ষণ। পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।

সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেল পাঁচটার পর পর উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এই ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা এ হামলা করে। এ সময় পুলিশ এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি হয়। উভয় পক্ষ থেকে প্রায় শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ ও ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানায়, বিকাল পাঁচটার পর পর ৫/৬টি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প মতলব বেলতলী এলাকার নদীতে মধ্যবর্তী এলাকায় মেঘনা নদীতে মহড়া শুরু করে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা।

এসময় টহলরত পুলিশের স্পিড বোর্ড দেখে প্রথমে ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরবর্তীতে ট্রলার থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে ডাকাত দলের সদস্যরা। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এসময় ডাকাতদের পক্ষ থেকে প্রায় ১০০ রাউন্ড এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ২৪ রাউন্ডের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়। আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে বিকাল পৌনে ছয়টার দিকে ট্রলার নিয়ে মতলবের দিকে চলে যায় হামলাকারী।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, পিয়াসের নেতৃত্বে ৫/৬টি ট্রলার নিয়ে অন্তত পক্ষে ৩০/৩৫জন নৌ ডাকাতরা পুলিশ লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে গুলি ছুড়তে থাকে তারা। পরিস্থিতি আচ করতে পেরে আমরাও পজিশন ঠিক করে সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য করে গুলি করতে থাকি। আমাদের দিক থেকে ২৪ রাউন্ডের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। আমাদের কোনো পুলিশ সদস্য আহত হয়নি।তবে কোন সন্ত্রাসী আহত হয়েছে কিনা তা আমি বলতে পারব না।’

বিষয়টি সম্পর্কে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, নৌ ডাকাতরা সম্ভবত চাঁদা তোলার উদ্দেশ্যে নদীতে নেমেছিল। পুলিশ থাকার কারণে তারা সুবিধা করতে পারেনি। উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের কোন পুলিশ সদস্য আহত হয়নি। নৌ ডাকাতের মধ্যে কেউ আহত হয়েছে কিনা আপনারা খবর নিয়ে দেখেন। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সামনে আরও কঠোর অবস্থানে থাকবে পুলিশ।’

প্রসঙ্গত, গজারিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুয়াগাছিয়ায় সক্রিয় কয়েকটি নৌ ডাকাত দল। অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, নৌযানে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে গত কয়েক মাসে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস ও লালু বাহিনীর হাতে খুন হয় ডাকাত সর্দার বাবলা, স্যুটার মান্নান ও হৃদয় বাঘ। ওই এলাকায় নৌ ডাকাতদের অপতৎপরতা কমাতে ২২ আগস্ট ইউনিয়নটির জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়। এদিকে প্রথম থেকে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছিল নৌ ডাকাত গ্রুপগুলো।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 05:27:57 pm, Monday, 25 August 2025
107 Time View

মুন্সীগঞ্জে পুলিশ ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ

Update Time : 05:27:57 pm, Monday, 25 August 2025

 

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় গুয়াগাছিয়ায় চালু হওয়া পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পের টহলরত পুলিশ বোর্ডকে লক্ষ্য করে শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে স্থানীয় জলদস্যুরা। আত্মরক্ষায় পুলিশের গুলি বর্ষণ। পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।

সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেল পাঁচটার পর পর উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এই ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা এ হামলা করে। এ সময় পুলিশ এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি হয়। উভয় পক্ষ থেকে প্রায় শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ ও ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানায়, বিকাল পাঁচটার পর পর ৫/৬টি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প মতলব বেলতলী এলাকার নদীতে মধ্যবর্তী এলাকায় মেঘনা নদীতে মহড়া শুরু করে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা।

এসময় টহলরত পুলিশের স্পিড বোর্ড দেখে প্রথমে ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরবর্তীতে ট্রলার থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে ডাকাত দলের সদস্যরা। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এসময় ডাকাতদের পক্ষ থেকে প্রায় ১০০ রাউন্ড এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ২৪ রাউন্ডের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়। আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে বিকাল পৌনে ছয়টার দিকে ট্রলার নিয়ে মতলবের দিকে চলে যায় হামলাকারী।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, পিয়াসের নেতৃত্বে ৫/৬টি ট্রলার নিয়ে অন্তত পক্ষে ৩০/৩৫জন নৌ ডাকাতরা পুলিশ লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে গুলি ছুড়তে থাকে তারা। পরিস্থিতি আচ করতে পেরে আমরাও পজিশন ঠিক করে সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য করে গুলি করতে থাকি। আমাদের দিক থেকে ২৪ রাউন্ডের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। আমাদের কোনো পুলিশ সদস্য আহত হয়নি।তবে কোন সন্ত্রাসী আহত হয়েছে কিনা তা আমি বলতে পারব না।’

বিষয়টি সম্পর্কে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, নৌ ডাকাতরা সম্ভবত চাঁদা তোলার উদ্দেশ্যে নদীতে নেমেছিল। পুলিশ থাকার কারণে তারা সুবিধা করতে পারেনি। উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের কোন পুলিশ সদস্য আহত হয়নি। নৌ ডাকাতের মধ্যে কেউ আহত হয়েছে কিনা আপনারা খবর নিয়ে দেখেন। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সামনে আরও কঠোর অবস্থানে থাকবে পুলিশ।’

প্রসঙ্গত, গজারিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুয়াগাছিয়ায় সক্রিয় কয়েকটি নৌ ডাকাত দল। অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, নৌযানে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে গত কয়েক মাসে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস ও লালু বাহিনীর হাতে খুন হয় ডাকাত সর্দার বাবলা, স্যুটার মান্নান ও হৃদয় বাঘ। ওই এলাকায় নৌ ডাকাতদের অপতৎপরতা কমাতে ২২ আগস্ট ইউনিয়নটির জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়। এদিকে প্রথম থেকে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছিল নৌ ডাকাত গ্রুপগুলো।