3:49 pm, Tuesday, 9 September 2025

বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর: অভিযুক্ত আ.লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা

1755636458.alig romna

 

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর মৌচাক এলাকায় রমনা থানা বিএনপির সাবেক কার্যালয় ভেঙে সেখানে দোকানপাট তৈরি করে ভাড়া তোলার অভিযোগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নামে প্রায় ১৬ বছর পর মামলা দায়ের করা হয়েছে।

২০০৯ সালে ঘটনার পর দীর্ঘ সময় নীরব থাকা হলেও, সম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পরিস্থিতি বদলানোর কারণে মামলা করার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী।

সোমবার (১৮ আগস্ট) রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন আরিফুল ইসলাম আরিফ, যিনি অবিভক্ত ঢাকা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও রমনা থানার সাবেক সভাপতি।

মামলায় আওয়ামী লীগের সাচ্চু শেখ, সাবেক কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কাজল, শেখ রইসুল ইসলাম ময়না, এম এ রহিম রানাসহ মোট ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ২০ থেকে ৩০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছরের নীরবতা মামলার বাদী আরিফুল ইসলাম আরিফ জানান, ২০০৯ সালে রমনার সিদ্ধেশ্বরী বয়েজ স্কুলের অনুমতি নিয়ে সেখানে বিএনপির কার্যালয় পরিচালিত হতো।

সেই বছরই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হন এবং পরে ১১০ বছরের কারাদণ্ড পান। দুই দফায় প্রায় ৮ বছর তিনি কারাগারে ছিলেন।

আরিফ অভিযোগ করেন, তার কারাগারের সুযোগ নিয়ে আসামিরা কার্যালয়টি ভাঙচুর করে। বুলডোজার দিয়ে পুরো কার্যালয় ধ্বংস করা হয়। জিয়া পরিবারের ছবি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বাধা দিলে একজন আসামি পিস্তল দিয়ে ফাঁকা গুলি ছোঁড়েন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

এই ঘটনার পর সেখানে প্রায় ১০টি দোকান তৈরি করে ভাড়া তোলা শুরু হয়। দীর্ঘ সময় কারাগারে বা আত্মগোপনে থাকার কারণে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মামলা করার পরিবেশ না থাকার কারণে এতদিন নীরব ছিলেন তিনি।

গণঅভ্যুত্থানের পর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর আরিফ গত ২৪ ডিসেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি ও কার্যালয় পুনরায় স্থাপনের দাবি জানান।

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আবুল বাশার জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দ্রুতই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 01:46:48 pm, Wednesday, 20 August 2025
103 Time View

বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর: অভিযুক্ত আ.লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা

Update Time : 01:46:48 pm, Wednesday, 20 August 2025

 

স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর মৌচাক এলাকায় রমনা থানা বিএনপির সাবেক কার্যালয় ভেঙে সেখানে দোকানপাট তৈরি করে ভাড়া তোলার অভিযোগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নামে প্রায় ১৬ বছর পর মামলা দায়ের করা হয়েছে।

২০০৯ সালে ঘটনার পর দীর্ঘ সময় নীরব থাকা হলেও, সম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পরিস্থিতি বদলানোর কারণে মামলা করার সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী।

সোমবার (১৮ আগস্ট) রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন আরিফুল ইসলাম আরিফ, যিনি অবিভক্ত ঢাকা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও রমনা থানার সাবেক সভাপতি।

মামলায় আওয়ামী লীগের সাচ্চু শেখ, সাবেক কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কাজল, শেখ রইসুল ইসলাম ময়না, এম এ রহিম রানাসহ মোট ১১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ২০ থেকে ৩০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়েছে। দীর্ঘ ১৬ বছরের নীরবতা মামলার বাদী আরিফুল ইসলাম আরিফ জানান, ২০০৯ সালে রমনার সিদ্ধেশ্বরী বয়েজ স্কুলের অনুমতি নিয়ে সেখানে বিএনপির কার্যালয় পরিচালিত হতো।

সেই বছরই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হন এবং পরে ১১০ বছরের কারাদণ্ড পান। দুই দফায় প্রায় ৮ বছর তিনি কারাগারে ছিলেন।

আরিফ অভিযোগ করেন, তার কারাগারের সুযোগ নিয়ে আসামিরা কার্যালয়টি ভাঙচুর করে। বুলডোজার দিয়ে পুরো কার্যালয় ধ্বংস করা হয়। জিয়া পরিবারের ছবি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বাধা দিলে একজন আসামি পিস্তল দিয়ে ফাঁকা গুলি ছোঁড়েন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

এই ঘটনার পর সেখানে প্রায় ১০টি দোকান তৈরি করে ভাড়া তোলা শুরু হয়। দীর্ঘ সময় কারাগারে বা আত্মগোপনে থাকার কারণে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মামলা করার পরিবেশ না থাকার কারণে এতদিন নীরব ছিলেন তিনি।

গণঅভ্যুত্থানের পর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর আরিফ গত ২৪ ডিসেম্বর কারাগার থেকে মুক্তি পান। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার বিবরণ তুলে ধরেন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি ও কার্যালয় পুনরায় স্থাপনের দাবি জানান।

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আবুল বাশার জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দ্রুতই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।