অ-সাংবাদিক ইন্সুরেন্স কর্মী যখন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার কথিত মহাসচিব!

স্টাফ রিপোর্টার:
বিভিন্ন কুট-কৌশলে বীমা করানো অসাংবাদিক যখন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার তথাকথিত মহাসচিব তখন সে সংস্থা দ্বারা সাংবাদিকদের কি কল্যাণ হবে তা বুঝার বাকি থাকে না। দামী গাড়িতে বিভিন্ন জেলা শহরে সংস্থার নামে ভ্রমনের আড়ালে প্রতিনিয়ত ইন্সুরেন্স এর দালালী করে সংস্থার বারোটা বাজিয়ে নিজের ব্যবসাকে দাঁড় করিয়ে নিতে ব্যস্ত জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার স্বঘোষিত কথিত মহাসচিব ইন্সরেন্স কর্মী মো: কামরুল ইসলাম।
মূলতঃ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রমে থাকলেও বর্তমানে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা কোন সংগঠন নয়। ২০১১ সনে প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব মুহম্মদ আলতাফ হোসেন এটাকে পারিবারিক লিমিটেড কোম্পানীতে রুপদান করে কোম্পানী এ্যাক্টে আরজেএসসি’র নিবন্ধনের মাধ্যমে।
যার পুরো নাম জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা লিমিটেড ও রেজিঃ নম্বর “সি-৯৫০৭৪/২০১১“।
এতে তিনি চেয়ারম্যান, তাহার ছেলে মুহম্মদ মনির হোসেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ছেলে মোহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম বাবু নামীয় আরেকজনকে পরিচালক হিসেবে নির্বাচন করে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থাকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে নিয়ে নেয়।
এরপর থেকে আর ঐ পরিবারের বাইরে কেউ কোন নেতৃত্বে আসতে পারেনি। সবচাইতে মজার বিষয় কোম্পানী আইনে করা কোন প্রতিষ্ঠানে নির্বাহী বা জেলা কমিটি না করা গেলেও তারা কয়েকদিন পরপর কমিটি বাণিজ্যে ব্যস্ত। সুচতুর কোম্পানীর অংশীদাররা নিজেদের কাজের জবাবদিহি না করতে হয় এমন লোককে সবসময় কমিটির দায়িত্বে রাখেন যাতে কেউ প্রশ্ন না করে।
এর মধ্যে যদি কেউ করে তাকে সাথে সাথে ব্লক ও কমিটি থেকে আউট করে দেয়া হয়। আর এমনই চলমান কমিটিকে চালিয়ে রাখার জন্য অর্থের যোগানদাতা হিসেবে অসাংবাদিক ইন্সুরেন্স কর্মী মোঃ কামরুল ইসলামকে মহাসচিব করে চালিয়ে যাচ্ছে কোম্পানী নামীয় সংস্থা। এর ফলে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থায় যোগ দেয়া সাংবাদিকরা বঞ্চিত হচ্ছে সাংগঠনিক সুবিধা থেকে সেই সাথে একটি মহল অবৈধ পন্থায় লাভবান হচ্ছে।
একটি ডেভলপমেন্ট কোম্পানি কিভাবে সাংবাদিক সংগঠন হয়?
যে সকল সাংবাদিক জনাব মুহম্মদ আলতাফ হোসেনের জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা করেন এবং সংগঠনটি সাংবাদিকদের একটি সরকারি নিবন্ধিত সংগঠন বলে মনে করেন, তাদের জ্ঞাতার্থে আমার এ পোস্ট।
“জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা” নামে কোনো সরকারি বা আধা-সরকারি বা সমাজ কল্যাণমূলক দপ্তরের কোনো রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন নেই।
জনাব মুহম্মদ আলতাফ হোসেন ২০১১ সালে জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে “জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা লিমিটেড” নামক একটি চার জন পরিচালকের নামে একটি বানিজ্যিক ও লাভজনক কোম্পানি গঠন করেছেন, যার রেজিস্ট্রেশন নান্বার “সি-৯৫০৭৪/২০১১“।
প্রতি বছর বার্ষিক সাধারণ সভার রেজুলেশন এবং অডিট রিপোর্ট জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হওয়া সত্বেও গত ১৩ বছর যাবৎ তিনি তার লাভজনক “জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা লিমিটেড” এ কাজটি একটি বারের জন্যও করেন নাই। তাহলে কি তার তথাকথিত বানিজ্যিক সংগঠনটির অস্তিস্থ আছে? অথচ তিনি প্রতারণার আশ্রয় গ্রহন করে সাধারণ সাংবাদিকগণকে যে গঠনতন্ত্রটি সরবরাহ করেছেন তাতে “সি” বা কমার্শিয়াল, ২০১১ সাল এবং লিমিটেড কথাগুলো বাদ দিয়ে শুধু “জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা” লিখে পূর্বের সংগঠনের গঠনতন্ত্রটি সংযুক্ত করেছেন, যা সম্পূর্ণ দালিলিকভাবে প্রতারণা এবং জালিয়াতির দণ্ডনীয় অপরাধ।
“জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা লিমিটেড” নামক বানিজ্যিক কোম্পানিটি জনাব আলতাফ হোসেনের পারিবারিক ডেভেলপিং কোম্পানি। এটির মোট পরিচালকের সংখ্যা ৪ জন এবং এরা সকলেই একই পরিবারের সদস্য ও সমানসংখ্যক শেয়ারের মালিক। এখানে অন্য কোনো ব্যক্তি বা সাংবাদিকের অংশগ্রহণের কোনো সুযোগই নেই।
যে সকল সাংবাদিক “জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা” যার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার সি-৯৫০৭৪/২০১১ করেন, তাদরকে আমি কোনো প্রশ্ন না করে নিচের প্রোফর্মা যেটি জনাব আলতাফ হোসেনসহ সকল পরিচালকগণ কর্তৃক স্বাক্ষরিত এবং জয়েন্ট স্টক কোম্পানিতে দাখিলকৃত, সেটি মনযোগ সহকারে দেখে, পড়ে ও বুঝে মন্তব্য করার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ করছি। যদি আমার তথ্য ভুল বা অসত্য হয় তাহলে আপনাদের প্রদত্ত যে-কোনো শাস্তি আমি মাথা পেতে নিতে বাধ্য থাকবে এবং সেই সাথে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি জনাব মীর লিয়াকত আলী ভাইকে নিয়ে আপনাদের আলতাফ গ্রুপ সমর্থিত “জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা” সাথে আমরা একাত্মতা ঘোষণা করবো মর্মে প্রতিজ্ঞা করছি। অপরদিকে আমার কথা যদি শতভাগ সঠিক ও সত্য হয়, তাহলে কি আপনারা সর্বজন শ্রদ্ধেয় জাতীয় সাংবাদিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি মীর লিয়াকত আলী ভাইয়ের সাথে একাত্মতা ঘোষণা কি করবেন?
এখনো কিন্তু ১৯৮২ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার অনেকেই জীবিত এবং সুস্থ্য রয়েছেন। প্রয়োজনে তাদেরকে ডেকে আমরা একত্রিত হয়ে তাদের কথা শুনে আমরা “জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার” বিভক্তিকে রোধ করে যোগ্য ও আগ্রহী সাংবাদিকদের দ্বারাই আমরা একটি এবং অভিন্ন “জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা” গঠন ও পরিচালনা করতে কি পারি না?
আমি এই মর্মে কথা দিচ্ছি যে, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা একত্রীত হলে আমি কোনো পদে থাকবো না।
এমনকি সংগঠনটি একত্রীতকরণের পর প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি মীর লিয়াকত আলী ভাইও কোনো নির্বাহী পদে থাকবেন না। খন্ডিত জাতীয় সাংবাদিক সংস্থাকে একত্রীকরণের জন্য সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি মীর লিয়াকত আলী ভাইকে অনেকটা জোর করেই আমরা এনেছি শুধু সমঝোতার লক্ষ্যে। আপনাদের সুচিন্তিত ও নিরপেক্ষ মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।
জয়েন্ট স্টকের তথ্য মতে, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা একটি পরিবারের নির্দিষ্ট পাঁচ জনের ব্যবসা কেন্দ্র ডেভলপার কোম্পানি হিসেবে রেজিষ্ট্রেশন করা। এটা কিভাবে সাংবাদিকদের সংগঠন হয়! একটা সাংবাদিক সংগঠনের নাম দিয়ে কিভাবে ডেভলপমেন্ট কোম্পানির লাইসেন্স হিসাবে ব্যাবহার করে, এটা আমাদের সাংবাদিকদের জন্য লজ্জাজনক।
বিস্তারিত আসছে পরবর্তী পর্বে..!