মো: শাহজাহান বাশার-স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণপাড়া, কুমিল্লার বিআরডিবি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে যেসব ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে, তা শুনলে গা শিউরে ওঠে। একদিকে তিনি একজন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল ব্যক্তি, অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো একাধিক খুন, জালিয়াতি, জমি দখল, পারিবারিক নির্যাতন ও সামাজিক ধ্বংসের ধারাবাহিক বর্ণনা। স্থানীয়রা সরাসরি বলছেন—“এই মানুষটি ভিনদেশি রক্তের, তার রক্তে কোনো দায়বদ্ধতা নেই, সে সমাজের কলঙ্ক।”
অভিযোগের ভয়াবহ চিত্র:
১. সামাজিক মাধ্যমে অশ্লীলতা ও হুমকি:
চেয়ারম্যানের ফেসবুক আইডি থেকে রাজনৈতিক কর্মী ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত কটূক্তি, হুমকি ও ঘৃণামূলক স্ট্যাটাস দেওয়া হচ্ছে। একাধিক নারী নেত্রীকেও তিনি ইঙ্গিতপূর্ণ ভাষায় অপমান করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকারি দায়িত্বে থাকা একজন ব্যক্তির এমন বেপরোয়া কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ এবং ফৌজদারি অপরাধের শামিল।
২. ভাইয়ের টাকা আত্মসাৎ, মানসিক নির্যাতন ও শিকলে বন্দী:
তার ভাইয়ের সঙ্গে ইউরোপ পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৪০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চরম প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে ভাইকে মানসিক অসুস্থ বানিয়ে ঘরের ভেতর শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে বলে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়—ভাইয়ের সম্পত্তিও জাল দলিল করে নিজের ছেলের নামে লিখে নিয়েছেন তিনি!
৩. জাল দলিল করে খাস জমি দখল:
সরকারি খাস জমি দখলের মতো অপরাধ কেউ সাধারণত মুখ ফুটে বলে না, কিন্তু আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে এ নিয়ে রীতিমতো মুখর জনগণ। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল কাগজপত্র বানিয়ে একের পর এক সরকারি জমি দখল করে নিয়েছেন।
তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আছে যে, তার সন্তানরা তাকে ‘লজ্জা’ হিসেবে দেখেন। পরিবারের সদস্যরা সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন, এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে একাধিকবার তার বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজারে মানববন্ধন হয়েছে।তথ্যানুসন্ধানে দেখা গেছে, তার সন্তানদের স্কুল ও কলেজে লক্ষাধিক টাকা বকেয়া পড়েছে। তিনি নিজ সন্তানদের শিক্ষাও নিশ্চিত করেননি, বরং অন্যের জমি দখল ও সম্পদ লুটতেই ব্যস্ত ছিলেন।
স্থানীয়দের বক্তব্য—আক্তার হোসেন একজন স্বার্থপর, সুযোগসন্ধানী, ‘ভিনদেশি স্বভাবের’ ধূর্ত ব্যক্তি, যার আচরণে সমাজে বিশৃঙ্খলা ছড়াচ্ছে। অনেকে বলেন, “এমন মানুষ সমাজে থাকলে যুবসমাজ ধ্বংস হবেই।”অভিযোগকারী বলেন, “আক্তার হোসেন এখন প্রায় ৭০ বছরের মানুষ। জীবনসায়াহ্নে এসে এত অপকর্ম করে তিনি কী অর্জন করতে চাইছেন? আল্লাহকে ভয় করুন, নিজেকে দেখুন আয়নায়। সন্তানরাও আজ আপনাকে ঘৃণা করে। আপনি কি নিজের কবর নিজেই খুঁড়ছেন?”
একাধিকবার ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ ও বার্তার মাধ্যমে আক্তার হোসেনের মন্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি, বরং নিজেকে আড়ালে রেখেছেন। তার এ নীরবতা আরও প্রশ্নবিদ্ধ করছে তার অবস্থান।
ব্রাহ্মণপাড়াবাসী, স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং ভুক্তভোগীরা এখন একযোগে দাবি তুলেছেন—আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জেলা প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেন অবিলম্বে কঠোর তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
যোগাযোগ: সম্পাদক ও প্রকাশক: মো: রাসেল সরকার, অফিস: ৩৯/৩, মানিক নগর, পুকুর পাড়, মুগদা, ঢাকা - ১২০৩, ফোন: +৮৮০১৭২৬৯১৫৫২৪, +৮৮০১৯৭৬৯১৫৫২৪, ইমেইল: Sheikhmdraselbd@gmail.com, www.dailydigantapratidin.com
2025 © All rights reserved © দৈনিক দিগন্ত প্রতিদিন