9:46 pm, Tuesday, 9 September 2025

সাবেক যুবলীগ নেতা শুক্কুরের আতঙ্কে মহাখালীর রেলগেট এলাকা

1744550727912

 

এম রাসেল সরকার:
পিস্তল উঁচিয়ে দৈনিক লুটপাট, মাদক ও সন্ত্রাসের অভিযোগ; তবুও গ্রেপ্তার হয়নি কেন? রাজধানীর মহাখালী রেলগেট এলাকা এখন এক ভিন্ন ধরনের আতঙ্কের নাম—মো. শুক্কুর।

একসময় আওয়ামী যুবলীগের কর্মী হিসেবে রাজনীতি করা শুক্কুর, বর্তমানে যুবদলের সাবেক নেতা তাহেরের (প্রকাশ) ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার শাসনাধীন মহাখালী এলাকা এখন সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

মহাখালী রেলগেটে প্রতিদিন সন্ধ্যায় দোকানদারদের টার্গেট করে বসেন শুক্কুর। কালো-সিলভার রঙের পিস্তল হাতে দাঁড়িয়ে দোকানদারদের কাছে চাঁদা আদায় করেন। চাঁদা না দিলে সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেন, “টাকা দিবি নাকি গুলি খাবি?” এই খোদাই চাঁদাবাজির পাশাপাশি শুক্কুরের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা ও জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে।

এলাকার জনগণ এখন চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তবে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, “লিখিত অভিযোগ না আসলে কিছু করা যাচ্ছে না।” তবে প্রশ্ন উঠছে—এলাকার পুলিশ এই ঘটনা জানার পরেও কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না? প্রশাসনের নিকট থেকে কতটুকু নজরদারি হবে, তা নিয়ে স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন রয়েছে।

সূত্রের খবর, শুক্কুরের নাম গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় রয়েছে। এমনকি স্পেশাল ব্র্যাঞ্চ (SB) এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (DGFI)-এর নজরেও তিনি আছেন। তবে এতসব নজরদারি সত্ত্বেও শুক্কুরের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা কেন নেওয়া হচ্ছে না?

বনানি থানার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, “ওসি স্যার ছুটিতে আছেন, তাই এই বিষয়ে কোনো বক্তব্য জানাতে পারছি না।” তবে স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলছেন“একজন পিস্তলধারী সন্ত্রাসী দিনের পর দিন এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও কি পুলিশ শুধু ছুটিতে থাকে?”

মহাখালী এলাকার এক দোকানদার গুমরে কেঁদে বলেন, “প্রতিদিন আমাদের রক্ত চুষে খাচ্ছে শুক্কুর, আর পুলিশ বলছে ‘অভিযোগ আনুন’! আমরা কি মরতে বসেছি? একজন ব্যবসায়ী সমিতির নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“যদি আজই শুক্কুরকে গ্রেপ্তার না করা হয়, আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যন্ত এ বিষয় তুলে ধরব!”
এই প্রতিবেদন লেখার সময় শুক্কুরকে ফোন করা হলে, তিনি বলেন,“আমার নাম কোনো থানায় মামলা নাই। আমি কখনো আওয়ামী যুবলীগ নেতা ছিলাম না, এইসব সব মিথ্যা। যারা অভিযোগ করেছে, তারা আমাকে হেয় করার জন্য এসব বানোয়াট গল্প করেছে। আপনি তদন্ত করুন, সত্য জানবেন।”

মহাখালীবাসীর দাবি: “একজন সন্ত্রাসীকে থামাতে রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যর্থতা নাকি কোন অন্য কারণ?” মহাখালীর বাসিন্দারা এখন একটাই প্রশ্ন তুলছেন: “একজন সন্ত্রাসীকে থামাতে কি রাষ্ট্রযন্ত্রের সব অঙ্গই ব্যর্থ, নাকি কারো সঙ্গে গাঁটছড়া আছে?” তারা দ্রুত শুক্কুরের গ্রেপ্তার, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার তদন্তে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন এবং সংশ্লিষ্ট থানার অবহেলার তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন।

মহাখালীর নাগরিকদের দাবি: শুক্কুরের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার তদন্তে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন,সংশ্লিষ্ট থানার অবহেলার তদন্ত
এখন প্রশ্ন ওঠে: এক পিস্তলধারী সন্ত্রাসী দিনের পর দিন মহাখালী এলাকায় এই তাণ্ডব চালাচ্ছে—এটি কি বাংলাদেশের আইনের শাসন, নাকি সন্ত্রাসী শাসনের আলামত?

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 01:35:33 pm, Sunday, 13 April 2025
156 Time View

সাবেক যুবলীগ নেতা শুক্কুরের আতঙ্কে মহাখালীর রেলগেট এলাকা

Update Time : 01:35:33 pm, Sunday, 13 April 2025

 

এম রাসেল সরকার:
পিস্তল উঁচিয়ে দৈনিক লুটপাট, মাদক ও সন্ত্রাসের অভিযোগ; তবুও গ্রেপ্তার হয়নি কেন? রাজধানীর মহাখালী রেলগেট এলাকা এখন এক ভিন্ন ধরনের আতঙ্কের নাম—মো. শুক্কুর।

একসময় আওয়ামী যুবলীগের কর্মী হিসেবে রাজনীতি করা শুক্কুর, বর্তমানে যুবদলের সাবেক নেতা তাহেরের (প্রকাশ) ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার শাসনাধীন মহাখালী এলাকা এখন সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।

মহাখালী রেলগেটে প্রতিদিন সন্ধ্যায় দোকানদারদের টার্গেট করে বসেন শুক্কুর। কালো-সিলভার রঙের পিস্তল হাতে দাঁড়িয়ে দোকানদারদের কাছে চাঁদা আদায় করেন। চাঁদা না দিলে সরাসরি হুমকি দিয়ে বলেন, “টাকা দিবি নাকি গুলি খাবি?” এই খোদাই চাঁদাবাজির পাশাপাশি শুক্কুরের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা ও জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে।

এলাকার জনগণ এখন চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তবে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, “লিখিত অভিযোগ না আসলে কিছু করা যাচ্ছে না।” তবে প্রশ্ন উঠছে—এলাকার পুলিশ এই ঘটনা জানার পরেও কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না? প্রশাসনের নিকট থেকে কতটুকু নজরদারি হবে, তা নিয়ে স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন রয়েছে।

সূত্রের খবর, শুক্কুরের নাম গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় রয়েছে। এমনকি স্পেশাল ব্র্যাঞ্চ (SB) এবং ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (DGFI)-এর নজরেও তিনি আছেন। তবে এতসব নজরদারি সত্ত্বেও শুক্কুরের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা কেন নেওয়া হচ্ছে না?

বনানি থানার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, “ওসি স্যার ছুটিতে আছেন, তাই এই বিষয়ে কোনো বক্তব্য জানাতে পারছি না।” তবে স্থানীয়রা প্রশ্ন তুলছেন“একজন পিস্তলধারী সন্ত্রাসী দিনের পর দিন এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও কি পুলিশ শুধু ছুটিতে থাকে?”

মহাখালী এলাকার এক দোকানদার গুমরে কেঁদে বলেন, “প্রতিদিন আমাদের রক্ত চুষে খাচ্ছে শুক্কুর, আর পুলিশ বলছে ‘অভিযোগ আনুন’! আমরা কি মরতে বসেছি? একজন ব্যবসায়ী সমিতির নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“যদি আজই শুক্কুরকে গ্রেপ্তার না করা হয়, আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যন্ত এ বিষয় তুলে ধরব!”
এই প্রতিবেদন লেখার সময় শুক্কুরকে ফোন করা হলে, তিনি বলেন,“আমার নাম কোনো থানায় মামলা নাই। আমি কখনো আওয়ামী যুবলীগ নেতা ছিলাম না, এইসব সব মিথ্যা। যারা অভিযোগ করেছে, তারা আমাকে হেয় করার জন্য এসব বানোয়াট গল্প করেছে। আপনি তদন্ত করুন, সত্য জানবেন।”

মহাখালীবাসীর দাবি: “একজন সন্ত্রাসীকে থামাতে রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যর্থতা নাকি কোন অন্য কারণ?” মহাখালীর বাসিন্দারা এখন একটাই প্রশ্ন তুলছেন: “একজন সন্ত্রাসীকে থামাতে কি রাষ্ট্রযন্ত্রের সব অঙ্গই ব্যর্থ, নাকি কারো সঙ্গে গাঁটছড়া আছে?” তারা দ্রুত শুক্কুরের গ্রেপ্তার, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার তদন্তে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন এবং সংশ্লিষ্ট থানার অবহেলার তদন্তের দাবি জানাচ্ছেন।

মহাখালীর নাগরিকদের দাবি: শুক্কুরের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার তদন্তে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন,সংশ্লিষ্ট থানার অবহেলার তদন্ত
এখন প্রশ্ন ওঠে: এক পিস্তলধারী সন্ত্রাসী দিনের পর দিন মহাখালী এলাকায় এই তাণ্ডব চালাচ্ছে—এটি কি বাংলাদেশের আইনের শাসন, নাকি সন্ত্রাসী শাসনের আলামত?