1:50 am, Tuesday, 9 September 2025

রাজধানীতে চলছে অনুমোদনহীন বাসের দৌরাত্ম্য

15367ba3ed3e0389

 

এম রাসেল সরকার:
নগর পরিবহনের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বেড়েছে অবৈধ গাড়ির চাপ। রাজধানীর বিভিন্ন রুটে অবৈধ বাসের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। তার মধ্যে শুধু হাতিরঝিলেই চার কোম্পানির বাস অবৈধভাবে চলছে। ঢাকার মোট আয়তনের মাত্র ৭.৫ শতাংশ সড়ক। এর মধ্যে মাত্র ২.৫ শতাংশ রাস্তা গণপরিবহনের জন্য উপযুক্ত। সেখানেও অবাধে চলাচল করছে অবৈধ যানবাহন। এককথায় রাজধানীতে চলছে অনুমোদনহীন বাসের দৌরাত্ম্য। বিআরটিএ এবং পরিবহন খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রাজধানীর শাহবাগ মোড় দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করা ১ হাজার ২২৫টি বাসের মধ্যে ৬৫৫টি অবৈধ। মতিঝিল দিয়ে চলাচল করা ৫৭৫টি বাসের মধ্যে ২৬২টি অবৈধ। আর বাড্ডা-রামপুরা, মোহাম্মদপুর-মিরপুর, যাত্রাবাড়ী দিয়ে চলাচল করা বেশির ভাগ বাসই অবৈধ। সদরঘাট থেকে নবীনগর রুটের সাভার পরিবহন লিমিটেডের ২০৪টি বাসের মধ্যে ১৩৭টি অবৈধ, ঘাটারচর থেকে সোনারগাঁ রুটের রজনীগন্ধা পরিবহন লিমিটেডের ১২২টি বাসের মধ্যে ১০৯টি অবৈধ, দিয়াবাড়ি থেকে পোস্তগোলা রুটের রাইদা এন্টারপ্রাইজের ২১১টি বাসের মধ্যে ১০০টি অবৈধ এবং নন্দন পার্ক থেকে চাষাঢ়া রুটের মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের ১৯৮টি বাসের মধ্যে ১৯৮টি অবৈধ।

সূত্র জানায়, হাতিরঝিলে চক্রাকার বাস সার্ভিস ২০১৫ সালে চালু করা হয়। রামপুরা, তেজগাঁও, গুলশান ও বাড্ডায় সহজে যাতায়াতের জন্য ওই চক্রাকার বাসটি চালু করা হয়। সব ঠিকঠাক চললেও জানুয়ারি থেকে হাতিরঝিল সড়কে চারটি কোম্পানির অবৈধ বাস চলাচল করছে। সেগুলো হলো প্রভাতী বনশ্রী, গাজীপুর পরিবহন, বলাকা ও আজমেরী গ্লোরী। ওই পরিবহনগুলো সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, সদরঘাট থেকে ছেড়ে রামপুরা, হাতিরঝিল হয়ে তেজগাঁও দিয়ে গাজীপুর চলে যায়।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই ঢাকায় গণপরিবহন খাতের বিশৃঙ্খলা চলছে। আর এখন ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক সড়কে আতঙ্ক তৈরি করছে। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মূল সড়কে তিন চাকার এই বাহন দুটির চলাচল বেড়েছে। পাশাপাশি প্যাডেলচালিত রিকশা তো রয়েছেই। দিন দিন সড়কে বেপরোয়া হয়ে উঠছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক। লাইসেন্সবিহীন তিন চাকার ওসব পরিবহনের অলিগলি থেকে এখন প্রধান প্রধান সড়কেই আধিক্য বেশি। যদিও স্থানীয় সরকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী যেসব যান থেকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো কর আদায় করতে পারে বা নিবন্ধন দিতে পারে সেই তালিকায় ব্যাটারিচালিত ওই বাহন নেই। তাতে সরকার যেমন বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি বাড়ছে নাগরিক ভোগানি—। পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশা সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সীমিত সংখ্যক লাইসেন্সের বিপরীতে অনুমোদনহীন লাখ লাখ রিকশা এ নগরীতে চলছে।

এদিকে এ বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, যাত্রী চাহিদাকে পুঁজি করে অবৈধ বাস চালানো হচ্ছে। যেখানে ১০ গাড়ির অনুমোদন আছে, সেখানে ২০টি গাড়ি চলছে। এ ধরনের অনিয়মগুলো বিদ্যমান। তবে বিআরটিএ ব্যবস্থা নিলে অবৈধ বাসগুলো চলতে পারবে না।

অন্যদিকে এ বিষয়ে ডিটিসিএ ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার প্রকল্প পরিচালক ধ্রুব আলম জানান, হাতিরঝিলে চলাচলকারী বাস কোম্পানির বিরুদ্ধে চিঠি ইস্যু করা হবে। একই সঙ্গে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Update Time : 08:52:04 pm, Sunday, 23 February 2025
153 Time View

রাজধানীতে চলছে অনুমোদনহীন বাসের দৌরাত্ম্য

Update Time : 08:52:04 pm, Sunday, 23 February 2025

 

এম রাসেল সরকার:
নগর পরিবহনের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বেড়েছে অবৈধ গাড়ির চাপ। রাজধানীর বিভিন্ন রুটে অবৈধ বাসের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। তার মধ্যে শুধু হাতিরঝিলেই চার কোম্পানির বাস অবৈধভাবে চলছে। ঢাকার মোট আয়তনের মাত্র ৭.৫ শতাংশ সড়ক। এর মধ্যে মাত্র ২.৫ শতাংশ রাস্তা গণপরিবহনের জন্য উপযুক্ত। সেখানেও অবাধে চলাচল করছে অবৈধ যানবাহন। এককথায় রাজধানীতে চলছে অনুমোদনহীন বাসের দৌরাত্ম্য। বিআরটিএ এবং পরিবহন খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রাজধানীর শাহবাগ মোড় দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করা ১ হাজার ২২৫টি বাসের মধ্যে ৬৫৫টি অবৈধ। মতিঝিল দিয়ে চলাচল করা ৫৭৫টি বাসের মধ্যে ২৬২টি অবৈধ। আর বাড্ডা-রামপুরা, মোহাম্মদপুর-মিরপুর, যাত্রাবাড়ী দিয়ে চলাচল করা বেশির ভাগ বাসই অবৈধ। সদরঘাট থেকে নবীনগর রুটের সাভার পরিবহন লিমিটেডের ২০৪টি বাসের মধ্যে ১৩৭টি অবৈধ, ঘাটারচর থেকে সোনারগাঁ রুটের রজনীগন্ধা পরিবহন লিমিটেডের ১২২টি বাসের মধ্যে ১০৯টি অবৈধ, দিয়াবাড়ি থেকে পোস্তগোলা রুটের রাইদা এন্টারপ্রাইজের ২১১টি বাসের মধ্যে ১০০টি অবৈধ এবং নন্দন পার্ক থেকে চাষাঢ়া রুটের মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের ১৯৮টি বাসের মধ্যে ১৯৮টি অবৈধ।

সূত্র জানায়, হাতিরঝিলে চক্রাকার বাস সার্ভিস ২০১৫ সালে চালু করা হয়। রামপুরা, তেজগাঁও, গুলশান ও বাড্ডায় সহজে যাতায়াতের জন্য ওই চক্রাকার বাসটি চালু করা হয়। সব ঠিকঠাক চললেও জানুয়ারি থেকে হাতিরঝিল সড়কে চারটি কোম্পানির অবৈধ বাস চলাচল করছে। সেগুলো হলো প্রভাতী বনশ্রী, গাজীপুর পরিবহন, বলাকা ও আজমেরী গ্লোরী। ওই পরিবহনগুলো সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, সদরঘাট থেকে ছেড়ে রামপুরা, হাতিরঝিল হয়ে তেজগাঁও দিয়ে গাজীপুর চলে যায়।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই ঢাকায় গণপরিবহন খাতের বিশৃঙ্খলা চলছে। আর এখন ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক সড়কে আতঙ্ক তৈরি করছে। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মূল সড়কে তিন চাকার এই বাহন দুটির চলাচল বেড়েছে। পাশাপাশি প্যাডেলচালিত রিকশা তো রয়েছেই। দিন দিন সড়কে বেপরোয়া হয়ে উঠছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক। লাইসেন্সবিহীন তিন চাকার ওসব পরিবহনের অলিগলি থেকে এখন প্রধান প্রধান সড়কেই আধিক্য বেশি। যদিও স্থানীয় সরকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী যেসব যান থেকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো কর আদায় করতে পারে বা নিবন্ধন দিতে পারে সেই তালিকায় ব্যাটারিচালিত ওই বাহন নেই। তাতে সরকার যেমন বিপুল রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি বাড়ছে নাগরিক ভোগানি—। পাশাপাশি ব্যাটারিচালিত রিকশা সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সীমিত সংখ্যক লাইসেন্সের বিপরীতে অনুমোদনহীন লাখ লাখ রিকশা এ নগরীতে চলছে।

এদিকে এ বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম জানান, যাত্রী চাহিদাকে পুঁজি করে অবৈধ বাস চালানো হচ্ছে। যেখানে ১০ গাড়ির অনুমোদন আছে, সেখানে ২০টি গাড়ি চলছে। এ ধরনের অনিয়মগুলো বিদ্যমান। তবে বিআরটিএ ব্যবস্থা নিলে অবৈধ বাসগুলো চলতে পারবে না।

অন্যদিকে এ বিষয়ে ডিটিসিএ ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার প্রকল্প পরিচালক ধ্রুব আলম জানান, হাতিরঝিলে চলাচলকারী বাস কোম্পানির বিরুদ্ধে চিঠি ইস্যু করা হবে। একই সঙ্গে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হবে।