লৌহজংয়ে শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ

লৌহজং প্রতিনিধি:
মুন্সিগঞ্জ লৌহজং উপজেলা হলদিয়া খলিলুর রহমান আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের এর মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হান কে বিনা কারণে মারধর এর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল রবিবার বিকালে উপজেলা হলদিয়া বাজার সংলগ্ন বিদ্যালয়ের মাঠে এই ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীর মা জিয়াসমিন বেগম রাতে লৌহজং থানায় একটি লিখতে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, রায়হান হাসান প্রমেল (১৮) লৌহজং উপজেলা খলিলুর রহমান আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের এসএসসি পরীক্ষার্থী। পিতা মৃত রহমান দেওয়ান মাতা জিয়াসমিন বেগম। তার ঠিকানা দেওয়ান বাড়ি দক্ষিণ হলদিয়া, লৌহজং, মুন্সিগঞ্জ। মারধরের ঘটনায় রায়হান হাসান এর মা জিয়াছমিন বেগম জহির দেওয়ান, রুহুল আমিন দেওয়ান, আল আমিন দেওয়ান ,শাওন,সামিত,মৃদুল রহমান মোল্লা সহ চৌদ্দ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি লিখিতে অভিযোগ করেন।
অভিযোগ থেকে আরো জানা যায়, হলদিয়া বাজার রায়হান সুমনা কোচিং সেন্টার কোচিং শেষ করে বাড়িতে আসার সময় জহির দেওয়ান তাকে ডাক দিয়ে মাঠে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
মাঠে আগে থেকে অবস্থান করা ১৩/১৪ জন মিলে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি লাথি মারে পরে লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে নীলা ফুলা জখম করে। পরে তার ডাক চিৎকারের কারণে তাকে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে তারা ঘটনা স্থল ত্যাগ করে। তার মা ও আত্নীয় স্বজন খবর পেয়ে লৌহজং উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া জন্য নিয়ে আসে।হাসপাতালে চিকিৎসা কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ভর্তির সুপারিশ করেন। তাকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শিক্ষার্থী রায়হান হাসান প্রমেল জানান, সাংবাদিকদের আমি কোচিং শেষে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সময় কোন কথা না বলেই আমাকে গলায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এর পরে বেশ কয়েক জন মিলে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি এবং লাঠি দিয়ে মারধর করে কারণ জানতে চাইলে তারা কিছুই বলে না।এক সময় আমি চিৎকার চেঁচামচি শুরু করলে তারা ঘটনা স্থল ত্যাগ করে।
বিষয়টি নিয়ে অভিযুক্ত রুহুল আমিন দেওয়ান এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রায়হান হাসান প্রমেল আমার ভাতিজা মারধর বিষয়টি আমার জানা নেই।আমি কিছুই বলতে পারব না। ওর সাথে আমাদের কোন বিরোধ নেই।
আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন ওর মা ভালো মানুষ না। পুলিশ এই বিষয়টি আগে থেকেই জানে। ওর মায়রে জিজ্ঞেস করেন আমি ঘটনা স্থলে ছিলাম না। এই মহিলা অনেক খারাপ।এলাকাবাসীর অনেকের দাবি এদেরকে বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়া হোক। একজন ছাত্রের গায়ে হাত দেওয়া বিষয় টি অনেকে মেনে নিতে পারছে না।
খলিলুর রহমান আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মোঃ সিরাজ মোল্লাকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টা আমি মোবাইল ফোনে জেনেছি তবে কে বা কারা মেরেছে তা আমি জানতে পারিনি। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কাজে ব্যস্ততার কারণে আমি তার বাড়িতেও যেতে পারিনি। তবে আমি শিক্ষার্থীকে দেখে সাক্ষাৎ করে বক্তব্য বিস্তারিত বলতে পারবো। এসময় তিনি আরো বলেন আমি বিষয় টি আমি গুরুত্বের সহকারে দেখবো।
লৌহজং থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হারুন আর রশিদ জানান শিক্ষার্থীর মারদোরের অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে পেলেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লৌহজং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: মাকছুদুর রহমান সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে খলিলুর রহমান আইডিয়াল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়টি অবগত করা হলে তিনি বলেন বিষয় টি আমি অবগত আগে জানতাম না। তবে পরিবারের লোকজন কে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ রইল এবং বিষয়টি আমি গুরুত্ব সহকারে দেখবো বলে জানান।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।